midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
গত বছরের মার্চে দেশে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শনাক্তের পর থেকেই ছন্দপতন হয়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও ব্যবসা-বাণিজ্যের। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে দেশের সাধারণ বীমা খাতের ব্যবসায়। তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে পুঁজিবাজারে; সাধারণ বীমা খাতের শেয়ারে। গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এক দফা উল্লম্ফন দেখা গেছে খাতটিতে। আর করোনার দ্বিতীয় প্রবাহের মধ্যেই এবার এক মাস ধরে সাধারণ বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এজেন্ট কমিশন শূন্যে নামিয়ে আনায় কোম্পানিগুলোর ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি আয় ও লভ্যাংশ বাড়বে এমন আশায়ই বিনিয়োগকারীরা সাধারণ বীমার শেয়ারে ঝুঁকছেন। বীমা খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের কারণে গত এক মাসে এ খাতের শেয়ার লেনদেন, বাজার মূলধন ও রিটার্ন বেড়েছে। চলতি বছরের ২১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক গড় লেনদেনের ৯ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল সাধারণ বীমা খাতের। একই সময়ে পুঁজিবাজারে মোট বাজার মূলধনের ২ শতাংশ ছিল সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর। আর এ সময়ে এ খাতের কোম্পানিগুলো থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ রিটার্ন পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ ১১ থেকে ১৫ এপ্রিল সময়ে ডিএসইর সাপ্তাহিক গড় লেনদেনের ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশই ছিল সাধারণ বীমা খাতের। একই সময়ে পুঁজিবাজারের মোট বাজার মূলধনে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর অবদান ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ। আর এ সময়ে এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। মূলত গত এক মাসে সাধারণ বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ও লেনদেন বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নির্দেশনা অনুসারে চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো এজেন্ট কমিশন বাবদ কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারছে না। এর আগে এ খাতের কোম্পানিগুলোর ১৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করার সুযোগ থাকলেও সীমার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করাটাই এক ধরনের প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এজেন্ট কমিশন না থাকায় সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো আর অতিরিক্ত ব্যয় করতে পারবে না এবং এতে কোম্পানিগুলোর আয় ও লভ্যাংশ দুটোই বাড়বে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে পুঁজিবাজারে। আর এ গুঞ্জন উসকে দিয়ে সুবিধা নিচ্ছে একশ্রেণীর কারসাজি চক্র। গত বছর বীমা খাতের শেয়ারদরে উল্লম্ফনের বিষয়টি মাথায় রেখে এবারো বিনিয়োগকারীরা এ খাতের শেয়ারের প্রতি ঝুঁকতে শুরু করেন। আয় ও লভ্যাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হলেও সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি সাধারণ বীমা কোম্পানির আর্থিক ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোনো কোম্পানির আয় ও লভ্যাংশ আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়লেও লভ্যাংশ একই রয়েছে। আবার আয়ে উল্লম্ফন হলেও নগদের পরিবর্তে স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে কোনোটি। কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬ শতাংশ নগদ ও ৪ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আগের বছর কোম্পানিটি ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২৯ পয়সা, যেখানে আগের বছর ইপিএস ছিল ১ টাকা ৭৫ পয়সা। প্রাইম ইন্স্যুরেন্স ২০২০ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যেখানে আগের বছরও কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৩২ পয়সা, যেখানে আগের বছর ইপিএস ছিল ৪৩ পয়সা। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যেখানে আগের বছর কোম্পানিটি ২ শতাংশ নগদ ও ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ৩৮ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ১৪ পয়সা। নিটল ইন্স্যুরেন্স ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যেখানে আগের বছর কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ইপিএস ২ টাকা ৮৪ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৩ টাকা ২২ পয়সা। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের ২ জুলাই অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর ছিল ১৭ টাকা ৬০ পয়সা। বেশ কয়েক দফায় দর বাড়া-কমার পর সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪২ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১৭ টাকা। সেখান থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়া-কমার মধ্য দিয়ে গতকাল সর্বশেষ ৯৪ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১৯ টাকা ১০ পয়সা। এরপর কয়েক দফা ওঠা-নামা শেষে সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি ৬১ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত বছরের ২৬ জুলাই বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির (বিজিআইসি) শেয়ারদর ছিল ২২ টাকা ৯০ পয়সা। সেখানে থেকে কোম্পানিটির দর বাড়া-কমার মধ্য দিয়ে সর্বশেষ গতকাল ৩৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১৭ টাকা ১০ পয়সা। এর পর থেকে টানা কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়তে থাকে এবং সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৯৮ টাকা ৬০ পয়সা। সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১২ জুলাই ছিল ২২ টাকা ৮০ পয়সা। সেখান থেকে টানা বাড়তে বাড়তে গতকাল শেয়ারটির দর ৬২ টাকা ১০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। গত বছরের ২ জুলাই সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর ছিল ১৩ টাকা ১০ পয়সা। মাঝখানে কয়েক দফায় উত্থান-পতনের পর গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার ২৭ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১৩ জুলাই ছিল ১৮ টাকা ৫০ পয়সা। এর পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়া-কমা শেষে সর্বশেষ গতকাল ৪৪ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসার পর লেনদেন শুরুর দিন গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর ১০ টাকা থেকে বেড়ে ১৫ টাকায় দাঁড়ায়। মাঝে ওঠা-নামার পর সর্বশেষ গতকাল ৪৭ টাকা ৯০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে কোম্পানিটির শেয়ারদর। চলতি বছরের ২৯ মার্চ পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। ১০ টাকার শেয়ার প্রথম দিনই বেড়ে হয় ১৫ টাকা। এর পর থেকে বাড়তে বাড়তে গতকাল সর্বশেষ ৩৪ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে কোম্পানিটির শেয়ার। ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার গত বছরের ২ জুলাই ছিল ২৪ টাকায়। এরপর কয়েক দফা উত্থান-পতন শেষে সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার ৪৮ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ২৯ টাকা ৮০ পয়সা। সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি ৯৩ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার গত বছরের ২ জুলাই ছিল ২০ টাকা ৩০ পয়সা। আর গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা ২০ পয়সায়। গত বছরের আগস্টে আইপিওতে আসার পর এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের ১০ টাকার শেয়ার প্রথম দিনই বেড়ে ২৪ আগস্ট ১৫ টাকায় দাঁড়ায়। এরপর বাড়া-কমার মধ্য দিয়ে সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩১ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১০ টাকা ২০ পয়সায়। সেখান থেকে বড় ধরনের উল্লম্ফনের পর সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি ২৫ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১৪ টাকা ১০ পয়সা। এরপর কয়েক দফা বাড়া-কমার পর সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটির দর দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ৫০ পয়সায়। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২৭ জুলাই ছিল ৪৭ টাকা ৩০ পয়সা। এরপর কয়েক দফা উত্থান-পতন শেষে সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি ৫৪ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের শেয়ারদর গত বছরের ১৩ জুলাই ছিল ২০ টাকা ৯০ পয়সা। আর সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ৪০ পয়সা। জনতা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১৪ টাকা ৭০ পয়সা। সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি ৩৪ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১৬ জুলাই ১৯ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়। আর গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩০ টাকা ৫০ পয়সায়। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২৬ জুলাই ছিল ২৪ টাকা ৮০ পয়সা। মাঝে কয়েক দফা বাড়া-কমা শেষে গতকাল শেয়ারটির দর ছিল ৩৮ টাকা ২০ পয়সা। নিটল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১৪ জুলাই ছিল ২১ টাকা ৮০ পয়সা। উত্থান-পতন শেষে সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটির দর দাঁড়িয়েছে ৫৬ টাকা ৫০ পয়সা। নর্দান ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ৫ জুলাই ছিল ১৭ টাকা। আর সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি ৩৯ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার গত বছরের ২৩ জুন ছিল ৩৮ টাকা ১০ পয়সা, যা সর্বশেষ গতকাল ৯৯ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। পিপলস ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১২ জুলাই ১৫ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল, যা গতকাল সর্বশেষ ৪১ টাকা ১০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১২ জুলাই ছিল ২১ টাকা ৪০ পয়সা। গতকাল শেয়ারটি ৩৭ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১৩ জুলাই ২৯ টাকা ৫০ পয়সা ছিল। আর গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৬৬ টাকা ৭০ পয়সা। প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ১৬ জুলাই ছিল ৩২ টাকা ৬০ পয়সা। আর সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটির দর দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকায়। প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২৬ জুলাই ১৭ টাকা ১০ পয়সা ছিল। সর্বশেষ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার ৪১ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১৯ টাকা ৪০ পয়সায়। গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ১৩৯ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ১২ টাকা। আর সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটির দর দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৮০ পয়সা। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ৯ জুলাই ৩৬ টাকা ২০ পয়সা ছিল, যা সর্বশেষ গতকাল ৫৪ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ৫ জুলাই ছিল ১৯ টাকা। আর গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৪৭ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। রূপালী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ৫ জুলাই ছিল ১৫ টাকা ৮০ পয়সা, যা গতকাল সর্বশেষ ৩৫ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ২ জুলাই ছিল ৩০ টাকা ১০ পয়সায়। আর সর্বশেষ গতকাল শেয়ারটি ৫৯ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ৮ জুলাই ছিল ২৮ টাকা ২০ টাকায়। গতকাল সর্বশেষ শেয়ারটির দর ছিল ৪২ টাকা ৪০ পয়সায়। ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর গত বছরের ৬ জুলাই ছিল ৩৪ টাকা ৮০ পয়সায়, যা সর্বশেষ গতকাল ৪৩ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। দেশের পুঁজিবাজারে বাজার মূলধনের তুলনায় তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর অবস্থান বেশ নিচে। সর্বশেষ গতকালের পরিসংখ্যান অনুসারে, পুঁজিবাজারে মোট বাজার মূলধনের ২ দশমিক ৪ শতাংশ ছিল সাধারণ বীমা কোম্পানির। বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্যও (এনএভিপিএস) তালিকাভুক্ত অন্য বেশকিছু খাতের চেয়ে অনেক কম। এছাড়া বীমা কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন কম হওয়ার কারণে এর শেয়ার সংখ্যাও কম। এতে কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে কারসাজির সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা। কভিডকালে সাধারণ বীমা খাতের ব্যবসার সার্বিক অবস্থা ও শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিআইসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, কভিডের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাওয়ায় আমাদেরও ব্যবসা কমেছে। বিশেষ করে মেরিন খাতে পুনঃবীমা কমে গেছে। তাছাড়া আমদানি-রফতানি কমে গেলে আমাদের ব্যবসাও কমে যাবে। কভিডের কারণে ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক অবস্থা নিয়েও এক ধরনের অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। তবে এজেন্ট কমিশন শূন্যে নামিয়ে আনার কারণে কোম্পানিগুলোর আয় ও লভ্যাংশ বাড়বে এ আশায় বিনিয়োগকারীরা এ খাতের শেয়ারের প্রতি ঝুঁকছেন বলে মনে করছেন তিনি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ও লেনদেনের সার্বিক অবস্থা সার্ভিল্যান্স সিস্টেমের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। গত বছর বীমা খাতের শেয়ারদর উল্লম্ফনের বিষয়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে বেশকিছু প্রতিবেদন বিএসইসির কাছে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু ঘটনায় সুনির্দিষ্ট কারসাজির প্রমাণ পাওয়ায় এ বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে। এবারো বীমা খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি কমিশনের নজরদারিতে রয়েছে। জানতে চাইলে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু দুর্বল ভিত্তির শেয়ারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরেও এসেছে। আমরা সবসময়ই বিনিয়োগকারীদের জেনে-বুঝে যাচাই-বাছাই করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। কিন্তু কেউ যদি এসব দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেন সেক্ষেত্রে তাকে বাধা দিতে পারি না। কারণ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের শতভাগ স্বাধীনতা রয়েছে। তবে আগের তুলনায় বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পরিণত আচরণের প্রবণতা বেড়েছে। আর কেউ যদি কারসাজির মাধ্যমে আইন লঙ্ঘন করে শেয়ারদর প্রভাবিত করেন, সেক্ষেত্রে আমরা ছাড় দিচ্ছি না। আমাদের সার্ভিল্যান্স সিস্টেমে এ ধরনের ঘটনা ধরা পড়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এক্ষেত্রে অনিয়ম করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে বীমা খাতের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা কম। বিভিন্ন সময়ে কোম্পানিগুলোর অনিয়ম ও সুশাসনের ঘাটতির বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। ফলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বীমা খাত বেশ পিছিয়ে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে বীমা কোম্পানির সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেছে। এতগুলো বীমা কোম্পানির ব্যবসা করার মতো অবস্থা এখানে নেই। তাছাড়া সুশাসনের ঘাটতির কারণে অনেকেই বীমা কোম্পানিগুলোর ওপর আস্থা রাখতে পারেন না। এ কারণে আমাদের এখানে বীমা করার প্রবণতাও কম। SOURCE: bonikbarta
0 Comments
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
December 2024
Categories |