midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে যখন বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজার ধসে পড়ছে ও কোনো প্রণোদনাই কাজ করছে না। একইসময়ে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ক্রমাগত দরপতন হচ্ছিল। বাজারে শেয়ার এর দাম ফ্রি-ফল হয়ে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী যখন দিশেহারা, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারে দর পতন ঠেকাতে বড় ধরণের ভূমিকা রেখেছে এবং বাজারে শেয়ার এর দামের ফ্রি-ফল বন্ধ হয়েছে। এতে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।
প্রধামন্ত্রীর নির্দেশনার ফলে শেয়ার এর ফ্লোর প্রাইস ঠিক করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ একটি শেয়ার এর দাম নির্দিষ্ট দাম এর নিচে নামতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যুগোপযুগী এবং সঠিক। শেয়ারবাজারে যখনি কোনো বড় ধরণের সংকট হয়েছে, তখনই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে দাঁড়িয়ে এমন সিদ্ধান্ত দিতে দেখি। যা প্রথমে সবাই সমালোচনা করলেও পরবর্তীতে সবাই স্বীকার করে আপনার সিদ্ধান্তই সঠিক। গত বাজেটে প্রত্যেক লিস্টেড কোম্পানিকে তার রিটেইনেড আর্নিংস এবং রিজার্ভ থেকে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে আইনের মাধ্যমে বাধ্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ঠিকই বুজতে পেরেছিলেন অধিকাংশ তালিকাভুক্ত কোম্পানি, বিশেষ করে ব্যাংকের উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা নিজেদের স্বার্থে এই প্রস্তাবটির চরম বিরোধিতা করেছিল। কারণ এই সব পরিচালক সবসময়ই নিজেদের স্বার্থে বোনাস শেয়ার দিতে পছন্দ করে। এতে করে তারা নিজেরা লাভবান হয় এবং বিনিয়োগকারী সবসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী ব্যাংক পরিচালকদের বলেছিলেন শুধুমাত্র আপনাদের স্বার্থ দেখলে আমার হবে না, আমাকে লাখ লাখ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখতে হবে। আপনার সেই সিন্ধান্তের সুফল পেতে শুরু করেছে বিনিয়োগকারীরা। এই পর্যন্ত যে কয়টি ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, সবগুলোই নগদ লভ্যাংশ ঘোষনা দিয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি লাখ বিনিয়োগকারী কৃতজ্ঞ। গত ১৪ ও ১৫ ই জানুয়ারী শেয়ারবাজারে আস্থা এবং তারল্য সংকটের কারণে শেয়ারের প্রাইস ফ্রি-ফল হচ্ছিল এবং বাজার ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছিল। তখন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ১৬ জানুয়ারী সকালে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে নিয়ে শেয়ারবাজারে ফ্রি ফল ঠেকানোর জন্য তৎক্ষণাৎ করণীয় কয়েকটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। তাও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে। যেখানে আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রত্যেকটি ব্যাংককে শহজ শর্তে ২০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া ৫ বছরের মধ্যে কোনো লস হলেও ওই প্রতিষ্ঠানকে কোনো মন্দ ঋণ সঞ্চিতি করতে হবে না। এটি ছিল অত্যন্ত একটি সঠিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের জন্য। যা ইতিপূর্বে আর কখনো হয়নি। অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করেছে এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এই টাকা নেয়ার এবং বিনিয়োগ করার ব্যাপারে তখন কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এইটা ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তারল্য সংকট নিরসনে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে সুযোগ করে দেওয়া। এটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় ছিল। এরপর করোনা ভাইরাস আতঙ্কে যখন ক্রমাগত শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ছিল, বিদেশী পোর্টফোলিওতে শেয়ার বিক্রির চাপ , বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মার্জিন রুল মেনে বিনিয়োগকারীর একাউন্টে ফোর্সড সেল হচ্ছিল। এসব মিলে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী যখন দিশেহারা, তখন ১৮ মার্চ মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া শেয়ারবাজার সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীকে উজ্জীবিত করেছে, ফ্রি-ফল বন্ধ হয়েছে। এরইমধ্যে যাদেরকে ২০০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে, তারা পর্যায়ক্রমে বিনিয়োগ শুরু করেছে। ব্যাংকগুলো নগদ লভ্যাংশ দেয়া শুরু করেছে এবং ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবল হতে শুরু করেছে। আমরা যারা শেয়ারবাজারের সাথে জড়িত আছি। যেমন তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকেরা, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকার-ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ সবাই যদি সঠিক সময় সঠিক ভূমিকা পালন করি, তাহলে ইনশাআল্লাহ একটি স্ট্রং এবং স্ট্যাবল শেয়ারবাজার গড়ে উঠবে। তাতে উপকৃত হবে সৎ উদ্যোক্তা। যারা তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করে এগিয়ে যেতে পারবে। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নয়, এতে করে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমান হ্রাস পাবে। দেশ এবং অর্থনীতি উপকৃত হবে। মাননীয় সরকার প্রধানকে শেয়ারবাজরের ক্রাইসিস মুহূর্তে যুগান্তকারী সুপারিশ দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ব্যাংক ব্যবস্থা ভালো থাকলে শেয়ারবাজার ভালো থাকবে। ব্যাংকের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ থেকে ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে। দক্ষ ব্যাংক ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে। দক্ষ ব্যাংক ব্যবস্থাপনা টিম গড়ে তুলতে হবে। লোন দেয়ার ব্যাপারে পরিচালকদের হস্তক্ষেপ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিশেষ করে ব্যাংকের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্বতন্ত্র পরিচালকের দায়িত্ব হচ্ছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা। কোনো লিস্টেড কোম্পানি এবং এর পরিচালকদের ইচ্ছায় যেন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া না হয়। বর্তমানে আমরা যেটা দেখতে পাই, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র পরিচালক এই প্রতিষ্ঠানের স্পনসর পরিচালকদের ইচ্ছা অনিচ্ছাই নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। তাতে করে এই স্বতন্ত্র পরিচালকরা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে না। এতে করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোনো সুশাসন থাকে না। সবাইকে বুঝতে হবে ব্যাংকের পরিচালকদের টাকায় ব্যাংকের পরিচালিত হয় না। ব্যাংক পরিচালিত হয় ডিপোজিটরদের টাকায়। অতএব ডিপোজিটরদের টাকা রক্ষা করার জন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে অত্যন্ত কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোরভাবে বেবস্থা নিতে হবে। দেউলিয়া আইনকে যুগোপযুগী করতে হবে। ইচ্ছা কৃত ঋণ খেলাপিদের লাইফ স্টাইল হাত দিতে হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হচ্ছে, ঠিক সেইভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারাম যে পক্রিয়ার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায় করেছেন এবং মার্জার এর মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করে ডিপোজিটরদের আস্থা অর্জন করেছেন, সেভাবে অর্থমন্ত্রীকে অগ্রসর হতে অনুরোধ করবো। ব্যাংক ব্যবস্থাপনাকে যদি সুশাসনে আনা যায়, খেলাপি আদায় করা যাই এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে যদি দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বন্ধ করে উদ্যোক্তাদেরকে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসা যায়, তাহলে ব্যাংকও টিকে যাবে এবং শেয়ারবাজার ভালো হবে। এই মুহূর্তে মাননীয় অর্থমন্ত্রী যে কাজটি শেয়ারবাজারের স্বার্থে জরুরিভাবে করতে পারেন, সেটি হলো কোম্পানি বাই ব্যাক আইন করা। অর্থাৎ যে সকল কোম্পানির স্ট্রং রিজার্ভ আছে, গ্রোথ ভালো, ইপিএস ভালো, সেসকল কোম্পানি যে কারনেই হক বাজার যখন খারাপ থাকে, তখন কোম্পনি যদি মনে করে তার শেয়ার টি এই দামে ক্রয়-বিক্রয় ঠিক না, তখন কোম্পানি রিজার্ভ থেকে শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়ে তার শেয়ারটি বাজারে স্ট্যাবল করতে পারে এবং দরপতন ঠেকাতে পারে। এতে করে বিনিয়োগকারী উপকৃত হবে। সেই কোম্পানির উপর বিনিয়োগকারীর আস্থা অনেক বেড়ে যায়। সকল উন্নত দেশের শেয়ারবাজারে এই আইন প্রযোজ্য আছে। মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো জরুরীভাবে এই আইনটি অবিলম্বে একটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে কার্যকরী করে মহান জাতীয় সংসদে পাস করে নেয়ার। এটা শেয়ারবাজারকে স্ট্যাবল করতে অনেক সাহায্য করবে। মাননীয় অর্থমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক, বিএসইসি, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ, এসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স অফ বাংলাদেশ, স্টক ডিলার ও ব্রোকাররাসহ আমরা বিশেষ করে যারা শেয়ারবাজার এবং অর্থিনীতি নিয়ে কথা বলি, আমাদের যার যার অবস্থান থেকে শেয়ারবাজারকে স্ট্যাবল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে একসাথে কাজ করতে হবে। আমরা যেন গুজব না ছড়িয়ে শেয়ারবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত না করি। ইনশাআল্লাহ আমরা যদি যার যার অবস্থান থেকে একসাথে কাজ করি, তবে শেয়ারবাজার অবশ্যই স্ট্যাবল হবে এবং লাখ লাখ বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা ও অর্থিনীতি লাভবান হবে । আমি একটি স্মৃতিসারণ করতে চাই, যা না বললেই নয়। আপনারা সবাই জানেন ২০০৯-২০১০ সালে আমি যখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট ছিলাম, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার একটি সিদ্ধান্ত আমাকে এবং দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করেছিল। তাহল ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যখন কোনো কোনো ব্যক্তি বিশেষ এর ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতুতে টাকা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমাদের দৃঢ়চেতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থে, সাধারণ জনগণের স্বার্থে আল্লাহর উপর ভরসা করে জনগণকে সাথে নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন অনেক বুদ্ধিজীবী এবং অর্থনীতিবিদ এটাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি অপরিপক্ক এবং আবেগী সিদ্ধান্ত বলেছিলেন। কিন্তু আমি সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এই সিদ্ধান্তের জন্য স্বাগত জানিয়ে একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীর পক্ষ থেকে বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে অর্থায়ন করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। বাস্তবতা হল পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান এবং শেষ পর্যায়ে । লেখক মো: রকিবুর রহমান সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড বিজনেস আওয়ার ২৪
1 Comment
M Hossain
26/3/2020 12:45:09 pm
First of all give you salute. I have been involve with this DSC share market since 1995. Though i lost millions of million taka this capital market. Only you the person who does works on behalf of small investor. Your proposal very effective. Pls try your best & all small investors are with you. May Allah help you.
Reply
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
September 2024
Categories |