midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
পুঁজিবাজারে চলমান দরপতনকে বিদ্যমান তহবিল সংকটেরই প্রতিফলন বলে মনে করছেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল সংকট কাটাতে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন তারা। অব্যাহত দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল লেনদেন শেষ হওয়ার পর ডিএসই বোর্ডরুমে জরুরি বৈঠক করেন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তারা। শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজগুলোর প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ডিবিএ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক ও বিএমবিএ সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনের বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন - 'Read More' ডিবিএ সভাপতি বলেন, টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাচ্ছে। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমরা বুঝতে পারছি, এর নেপথ্য কারণ আসলে তহবিল সংকট। এডি রেশিও সমন্বয়সহ নানা কারণে কয়েক মাসের ব্যবধানে মানি মার্কেটে তারল্য সংকট অনেক বেড়ে গেছে। সুদের হার দুই অংকে উঠে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের আমানতের সুদও ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। শেয়ারবাজারের ওপর এর প্রভাব কয়েকভাবে পড়ছে। প্রথমত. সুদের হার বাড়লে অনেকে সেখান থেকে পুঁজি সরিয়ে নেন। দ্বিতীয়ত. বাজারের নিম্নমুখিতায় যে প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার কিনে পতন রোধ করে, তাদেরও যথেষ্ট সক্ষমতা নেই। অনেক প্রতিষ্ঠান এডি রেশিওজনিত কারণে কিছুটা চাপে আছে। আবার যেসব প্রতিষ্ঠানের হাতে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল আছে, তারা আবার এক্সপোজার ঠিক রাখতে গিয়ে বিনিয়োগ করতে পারছে না। শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ নীতিনির্ধারকরা এদিকে দৃষ্টি দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পুঁজিবাজারে তারল্য ও তহবিল সংকট নিরসন প্রসঙ্গে বিএমবিএ সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রতিকূল সময়গুলোয় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) সাধারণত একটা সাপোর্ট দিত। কিন্তু এ বছর বিভিন্ন ব্যাংক তহবিল তুলে নেয়ার কারণে আইসিবিও সে সাপোর্টটুকু দিতে পারছে না। আইসিবি একটি শক্তিশালী অবস্থানে থাকলে বাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক হবে। বাজারের স্বার্থে আইসিবিকে সিঙ্গেল পার্টি এক্সপোজার লিমিট থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ পুনর্ব্যক্ত করেন ডিবিএ ও বিএমবিএর প্রতিনিধিরা। তারা আরো বলেন, এডি রেশিও সমন্বয় করতে গিয়ে অনেক ব্যাংকই তহবিল সংকটে আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিআরআর (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও) ৬ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনলে অর্থবাজারে তারল্য কিছুটা বাড়বে। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এডি রেশিও অনেক কম। তারা চাইলে সাবসিডিয়ারি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে পারে। ডিবিএ সভাপতির বক্তব্যের সূত্র ধরে মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এডি রেশিওর বাইরেও পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আমরা বাজারসংশ্লিষ্টরা কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে বাধাগুলো অপসারণের কিছু সুপারিশ রয়েছে। এগুলোর বাস্তবায়ন হলে বাজারে এর প্রতিফলন দেখা যাবে বলে আশা করি। তাদের সুপারিশগুলোর মধ্যে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের এক্সপোজার গণনার পদ্ধতিতে পরিবর্তন অন্যতম। তারা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেকোনো কোম্পানির শেয়ার, এমনকি বন্ডে বিনিয়োগকেও পুঁজিবাজারে একেকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এক্সপোজার হিসেবে বিবেচনা করছে। এর পরিবর্তে শুধু স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনযোগ্য শেয়ারে বিনিয়োগকেই এক্সপোজার গণ্য করার সুপারিশ তাদের। কারণ কোনো প্রতিষ্ঠানে কৌশলগত বিনিয়োগ আর স্টক এক্সচেঞ্জে হাতবদল হওয়া শেয়ারে বিনিয়োগ এক নয়। দ্বিতীয়ত. কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সিকিউরিটিজের ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে এক্সপোজার গণনা না করে শুধু বাজারমূল্য বিবেচনা করে। এ কারণে সম্পদের বাজারমূল্য বেড়ে গেলে তা বিক্রি করে এক্সপোজার ঠিক রাখতে হয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের উদাহরণ পর্যালোচনা করে স্থানীয় বাস্তবতার নিরিখে এটি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। বাজারমূল্যে এক্সপোজার গণনার সমস্যা সম্পর্কে মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের একটি প্রাইমারি শেয়ারে বিনিয়োগ করলে সেটিই তার এক্সপোজার হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। কারণ সেকেন্ডারি বাজারে সেই শেয়ারটি ৫০ টাকায় লেনদেন হলে ওই প্রতিষ্ঠানের এক্সপোজারও ৫০ টাকা দেখায়, যেখানে তার প্রকৃত ঝুঁকি এর এক-পঞ্চমাংশ। নিছক এক্সপোজার গণনা পদ্ধতির কারণেই ওই ব্যাংককে ৪০ টাকার শেয়ার বিক্রি করতে হয়। তৃতীয়ত. পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারিগুলোর বিনিয়োগকে এক্সপোজারের আওতায় না এনে শুধু ওই ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকেই হিসাবে নেয়া উচিত বলে মনে করছেন তারা। অর্থবাজারের নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়গুলোকে বাস্তবতার নিরিখে পুনর্বিবেচনা করলে পুঁজিবাজার অনেক স্থিতিশীল হবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
0 Comments
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
January 2025
Categories |