midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
দুর্বল ও স্বল্প মূলধনী কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি বন্ধে কঠোর হয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ইতোমধ্যে তিনটি কোম্পানির লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে এবং পাঁচটি কোম্পানিকে স্পট মার্কেটে পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশ না দেয়া এবং উৎপাদন বন্ধ কোম্পানিকে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত করার নীতিমালার পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্থাটি।
লেনদেন বন্ধ ও স্পট মার্কেটে পাঠানোর বিএসইর এই পদক্ষেপ সঠিক বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, একশ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী কারসাজির মাধ্যমে দুর্বল মৌলভিত্তি ও স্বল্প মূলধনী কোম্পানির শেয়ারদাম অস্বাভাবিক হারে বাড়াচ্ছেন। এ জন্য তারা বাজারে নানা গুজব ও কৃত্রিমভাবে শেয়ার সংকট তৈরি করছেন। একপর্যায়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অতিরিক্ত দামে শেয়ার ধরিয়ে দিয়ে নিজেরা বেরিয়ে যাচ্ছেন। কারসাজি চক্রের এসব খেলা বন্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিএসইসির একটি সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিং এবং রহিমা ফুডকে মূল মার্কেট থেকে তালিকাচ্যুত (ডিলিস্টিং) করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। তবে এ তালিকাচ্যুতের আগে ডিএসই থেকে কোনো সতর্কবার্তা প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ডিএসইর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা সমালোচনা দেখা দেয়। ফলে কোনো প্রকার সতর্কবার্তা না দিয়ে সরাসরি তালিকাচ্যুত করার প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে ডিএসই এবং তালিকাচ্যুত করার অংশ হিসেবে কয়েকটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওসব কোম্পানির বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে ডিএসই থেকে তথ্যও প্রকাশ করা হয়। ডিএসইর এই পদক্ষেপের পাশাপাশি একটি কোম্পানিকে কোন পরিপ্রেক্ষিতে তালিকাচ্যুত করা যায়, সে বিষয়ে একটি নীতিমালা করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। এখন তালিকাচ্যুতের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা করে দেবে বিএসইসি, তবে পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করার দায়িত্ব পালন করবে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির কমিশনার স্বপন কুমার বালা বলেন, কোম্পানি তালিকাচ্যুত করার বিষয়ে আমাদের কোনো নীতিমালা নেই। আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। এ বিষয়ে আমরা একটি নীতিমালা করবো। এ জন্য বিভিন্ন বিষয় ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা নীতিমালা করলেও তালিকাচ্যুতের কাজটি করবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। bsec-2 এদিকে বিএসইসির একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সরকার দেশের পুঁজিবাজারকে ভালো অবস্থানে নিয় যেতে চায়। এ লক্ষে সরকারের ওপর মহল থেকে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও বলা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বিএসইসি তিন কোম্পানির লেনদেন বন্ধ এবং পাঁচ কোম্পানিকে স্পট মার্কেটে পাঠাতে ডিএসইকে নির্দেশ দেয়। সেইসঙ্গে ডিএসই থেকে দুই কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হয়। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লেনদেন বন্ধ হওয়া কোম্পানি তিনটি হলো- মুন্নু জুট স্টাফলার্স, বিডি অটোকার্স এবং লিগাসি ফুটওয়্যার। পুঁজিবাজারে এই কোম্পানি তিনটির লেনদেন ৩০ কার্যদিবস বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্পট মার্কেটে যাবে মুন্নু সিরামিক, স্টাইল ক্রাফট, ড্রাগন সোয়েটার, আজিজ পাইপ এবং কে অ্যান্ড কিউ লিমিটেড। এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান জানান, কোম্পানিগুলো আমাদের পর্যবেক্ষণে ছিল। আমরা বেশকিছু বিষয় বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিন কোম্পানির লেনদেন ৩০ কার্যদিবস পরে চালু হবে কি-না, এটা এখই বলা যাচ্ছে না। আমরা এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করে দেখব, পরিস্থির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এমনও হতে পারে কোম্পানি তিনটির লেনদেন বন্ধের সময় আরও বাড়তে পারে। তবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। বিএসইসির এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, স্বল্প মূলধনী কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ায় বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা অনেকটা সহজ হয়। বাজার পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, সম্প্রতি স্বল্প মূলধনী বেশকিছু কোম্পানির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ডিএসই থেকে কয়েক দফা সতর্ক করার পরও কোম্পানিগুলোর দাম বৃদ্ধির ধারা থামেনি। এ পরিস্থিতিতে বিএসইসি তিন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিক আছে। একটি ভালো পুঁজিবাজারের জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি। তবে শুধু শেয়ার লেনদেন বন্ধ রাখলেই হবে না। শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর পেছনে যারা আছে তাদেরও খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, বিএসইসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভালো পুঁজিবাজারের স্বার্থে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। যারা দুর্বল কোম্পানির শেয়ার নিয়ে খেলা করে, এটা তাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। আমরা বিএসইসির সিদ্ধান্তকে শতভাগ সমর্থন করি। কারণ কিছু চক্র দুর্বল কোম্পানির শেয়ার নিয়ে খেলা করায় সার্বিক বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দাম হু হু করে বাড়ে অথচ ভালো কোম্পানির শেয়ার ধুকতে থাকে। এটা কিছুতেই যুক্তিসংগত হতে পারে না। অবশ্য মুন্নু জুট স্টাফলার্সসহ দুর্বল কিছু কোম্পানির বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে চলতি মাসের শুরুতেই জানিয়েছিলেন ডিএসইর পরিচালক মো.রকিবুর রহমান। তিনি সেসময় বলেন, একটি ভালো পুঁজিবাজারের স্বার্থে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করছি। দুর্বল কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গেম খেলা আমরা বন্ধ করতে চাই। আমরা বিনিয়োগকারীদের একটি ভালো পুঁজিবাজার উপহার দিতে চাই।-জাগো নিউজ শেয়ারনিউজ
0 Comments
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
September 2024
Categories |