midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
বন্ড মার্কেটকে গতিশীল করতে হলে এ খাতে মিউচুয়াল ফান্ডের মতো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হবে। যদিও বাংলাদেশে এ খাতটি এখনো পিছিয়ে রয়েছে। সংস্কারের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডকে গতিশীল করে তুলতে না পারলে বন্ডে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারী পাওয়া যাবে না। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১-এর সমাপনী দিনে বিজনেস সেশনে পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সামিটের এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত হতে হলে আমাদের পুঁজিবাজারসহ অন্যান্য খাত থেকে বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগ দরকার। বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য আমাদের শ্রমশক্তি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এবং স্থিতিশীল ক্রেডিট রেটিং রয়েছে। উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ডিএসই সূচক ক্রমবর্ধমান। আমাদের প্রত্যাশা এটি আরো সামনের দিকে যাবে। আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক বাজারকাঠামো রয়েছে। লেনদেনে ভিন্নমাত্রা যোগ করতে ডিএসই ব্লকচেইন প্রযুক্তি কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সিএসই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ইটিএফ) মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগ আসার বিষয়েও প্রাথমিক আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, সম্প্রতি আমি বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের বিভিন্ন অর্থনৈতিক নির্দেশক দেখেছি। ভিয়েতনামের সঙ্গে অনেক নির্দেশকেই বাংলাদেশ প্রায় সম-অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে ভিয়েতনাম আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। ভিয়েতনাম প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের দারিদ্র্য অনেকটাই কমাতে সক্ষম হয়েছে। গত এক দশকে আমাদের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং এটি ক্রমবর্ধমান। আন্তর্জাতিক মুদ্র তহবিলের (আইএমএফ) প্রক্ষেপণ অনুসারে ২০২৬ সালে ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশি হবে। আমাদের অর্থনীতি বর্তমানে রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে রয়েছে। কর ব্যবস্থা, আর্থিক মধ্যস্থতা ও দেউলিয়া আইন প্রবর্তনের মতো বেশকিছু সংস্কার আমাদের করতে হবে। তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এবং সরকার ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি। প্যানেল আলোচনায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া বলেন, আজকেই (গতকাল) আমার কাছে একটি মেইল এসেছে। একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের একটি ব্রোকারেজের সঙ্গে মিলে কাজ করতে চায়। তাদের কাছে অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী রয়েছে, যারা বিনিয়োগে আগ্রহী। ব্রোকাররাও বাজারের উন্নয়নে কাজ করছে। ডিএসইর একটি ভালো লেনদেনের সিস্টেম রয়েছে। এটিকে আরো উন্নত করে সমন্বিত একটি প্লাটফর্মে রূপান্তর করা প্রয়োজন। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) আপস্ট্রিম ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন গ্রুপ এশিয়ার প্রিন্সিপাল ইনভেস্টমেন্ট অফিসার ক্রিস্টিনা অনগোমা বলেন, আমরা গ্রাহকদের জলবায়ুসংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের অর্থায়ন করছি। সবুজ অর্থায়ন, ব্লু বন্ডের মতো বিষয়ে আমরা কাজ করছি। বিএসইসিকে আমরা আইনি কাঠামো সংস্কারের ক্ষেত্রে সহায়তা করেছি। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও চাইছি বাংলাদেশের পুঁজিবাজার আরো গতিশীল হোক। বাংলাদেশে আমরা প্রথমবারের মতো কোনো বন্ডে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছি। শিগগিরই এটির ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানান তিনি। গ্রিন ডেল্টা ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগকারী দরকার। সুকুকের মতো শরিয়াহভিত্তিক পণ্যের আরো প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ডিজিটাল বুথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ডিজিটাল বুথের মাধ্যমে শরিয়াহভিত্তিক পণ্য ও মিউচুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করা যেতে পারে বলে মত দেন তিনি। যুক্তরাজ্যের ডন গ্লোবাল ম্যানেজমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার (সিআইও) মরিস পট বলেন, বাংলাদেশে একটিও ইটিএফ নেই। অথচ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন ভারত ও পাকিস্তানে ইটিএফ রয়েছে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ হচ্ছে ইটিএফ। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের কারণে এখানে বিদেশীরা বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজার থেকে বিদেশীরা বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে এটি কোনো সময় আবার ফিরে আসতে পারে। এ সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল বলে মত দেন তিনি। রহমান রহমান হক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের সিনিয়র পার্টনার আদিব এইচ খান বলেন, বাংলাদেশে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি ও নিরীক্ষার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করা হয়ে থাকে। তবে ব্যাংকের বিষয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। সার্বিকভাবে আগের তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশে আর্থিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষার মান অনেক উন্নত হয়েছে বলে জানান তিনি। শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান প্যানেল আলোচনায় বলেন, কেওয়াসি, কাস্টডিয়ান ব্যাংক খুঁজে বের করা ও নিটা অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে বিদেশী ও অনিবাসী বিনিয়োগকারীদের যেসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় সেটি তাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। এমনকি তাদের সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে অনেক ধরনের কাগজপত্র জমা দিতে হয়। বিদেশী বিনিয়োগের মাধ্যমে কিন্তু দেশের মধ্যে অর্থপ্রবাহ হচ্ছে, বাইরে যাচ্ছে না। ফলে এক্ষেত্রে এত আনুষ্ঠানিকতা না রেখে প্রক্রিয়াগুলো ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে একীভূত ও সহজ করা প্রয়োজন। যদি কোনো বিদেশী বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে মূলধনি মুনাফা অর্জন করে সেটি দেশের বাইরে নিতে চায় তাহলে প্রত্যেকবার তাকে নিরীক্ষকের সার্টিফিকেশন দরকার হয়। এ ধরনের শর্ত থাকলে বিদেশী বিনিয়োগ আসবে না। দেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের বিষয়ে তিনি বলেন, এ খাত বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ মিউচুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারের অন্যতম একটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। খাতটিকে সংস্কারের মাধ্যমে গতিশীল করতে হবে। তা না হলে বন্ড মার্কেটের জন্য বিনিয়োগকারী খুঁজে পাওয়া যাবে না। Source: bonikbarta
0 Comments
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
February 2025
Categories |