midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
করোনা মহামারীর মধ্যেই চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনা-সংকটে স্থবির অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে এই মুদ্রানীতির মাধ্যমে মুদ্রার যোগান বাড়ানোর নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক রেট এবং রেপো ও রিভার্স রেপোর সুদ হার দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই মুদ্রানীতিকে সম্প্রসারণমূলক ও সংকুলানমুখী (Expansionary and accommodative) বলে অভিহিত করেছে।
গতকাল বুধবার (২৯ জুলাই) গভর্নর ফজলে কবির আনুষ্ঠানিকভাবে এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছেন। এতদিন ষান্মাষিক বা ৬ মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হলেও এবার পুরো অর্থবছরের জন্যই তা ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ব্যাংক রেট ১০০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৫ শতাংশ থেকে তা ৪ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। প্রায় ১৭ বছর পর ব্যাংক রেট কমানো হল। উল্লেখ, বাংলাদেশ ব্যাংক যে সুদ হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। ব্যাংক রেট কমলে ব্যাংকগুলোর পক্ষে কম সুদে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তহবিল পাওয়া সম্ভব। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোর তহবিল খরচ কমানোর পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী তারল্য সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে এক দিন মেয়াদী রেপোর সুদ হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর রিভার্স রেপোর সুদহার ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস কমিয়ে নামিয়ে আনা হয়েছে ৪ শতাংশে। উল্লেখ, রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো জরুরি তারল্য চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ধার নেয়। আবার রিপোআর্স রেপোর মাধ্যমে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা জমা রাখা যায়। নতুন মুদ্রানীতিকে ইতিবাচক হিসেবে অভিহিত করেছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ব্যাংক রেট ও রেপোর সুদের হার কমানোয় ব্যাংকের তহবিল ব্যয় কমবে। তাদের তারল্য বাড়বে। আর তাতে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান অর্থসূচককে বলেন, নতুন মুদ্রানীতি পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক। এই মুদ্রানীতিতে মুদ্রার সরবরাহ তথা তারল্য বাড়ানোর নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে অর্থনীতিতে গতি আসবে। কেউ কেউ যদিও মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির আশংকা করছেন, তবে করোনা সংকটে অর্থনীতিতে গতি ফেরানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এতটুকু ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। মূল্যস্ফীতি যদি কিছুটা বেড়েই যায় তাহলে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষকে সহায়তা দেওয়ার জন্যে সরকার নীতিগত অন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে পারে। ঘোষিত মুদ্রানীতি পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্রোকারহাউজ ইবিএল সিকিউরিটিজের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক। চার্টার্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্টদের সংগঠন সিএফএ সোসাইটির সাবেক সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান নতুন মুদ্রানীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই মুদ্রানীতি অনেকাংশে পুঁজিবাজারবান্ধব বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি অর্থসূচককে বলেন, মুদ্রানীতিতে বিভিন্ন ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর কাছে মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর এক্সেস টু লিক্যুইডিটি (Access to liquidity) বাড়বে। রেপোর সুদ হার কমায় আগের চেয়ে সাশ্রয়ীভাবে জরুরি তহবিল নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে রিভার্স রেপোর সুদহার কমায় ব্যাংকগুলো উদ্বৃত্ত তারল্য বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত রাখাকে কম লাভজনক মনে করবে। তারা ঋণ দেওয়ার জন্য আরও সিরিয়াস হবে। এর ফলে রেগুলেটরি নির্দেশে নয়, বরং বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমেই সুদ হারের নয়-ছয় বাস্তবায়ন আরও সহজ হবে। তবে এসএমই খাতের অর্থায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক যে রিফাইন্যান্সিং সুবিধা দিচ্ছে, মুদ্রানীতিতে সেটির সুদ হার কমানোর ঘোষণা থাকলে আরও ভাল ভাল হতো। যদিও যে কোনো সময় এটি কমানোর সুযোগ বাংলাদেশ ব্যাংকের আছে। দেশের অন্যতম শীর্ষ মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনে করেন, নতুন মুদ্রানীতি শুধু অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন নয়, পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতেও ভূমিকা রাখবে। ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়শনের (ডিবিএ) সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন অর্থসূচককে বলেন, নতুন মুদ্রানীতি পুঁজিবাজারের জন্য অনেক ভাল হয়েছে। সরকার যে পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফেরানোর বিষয়ে আন্তরিক বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির সাম্প্রতিক বিভিন্ন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তা প্রতিফলিত হচ্ছে। মুদ্রানীতিতেও এই প্রতিফলন রয়েছে। সূত্র: অর্থসূচক
0 Comments
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
September 2024
Categories |