midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
শিহাব আলম খান: আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংসদে “সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের” শীর্ষক বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্বাধীনতার পর এবারই সর্ববৃহৎ ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার। পুঁজিবাজার ইস্যুতেও প্রত্যক্ষ বিভিন্ন প্রনোধণা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। পাশাপাশি পুঁজিবাজারের পরোক্ষ ভাবে প্রভাব ফেলবে এমন আরো অনেক প্রনোধণা রয়েছে।
১। লভ্যাংশ আয়ের করমুক্ত সীমা বৃদ্ধিঃ করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এই সুবিধা যারা নিয়মিত ট্যাক্স প্রদান করেন তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে। যারা ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেনা তারা এই সিদ্ধান্ত থেকে উপকৃত হবেন না। তাদের লভ্যাংশ আয়ের উপর ১৫% করে কর কাটার বিধানে কোন পরিবর্তন আসেনি। ২। অনিবাসী কোম্পানির লভ্যাংশ আয়ে দ্বৈতকর প্রত্যাহারঃ অনিবাসী কোম্পানির লভ্যাংশ আয়ের উপর একাধিকবার করারোপ রোধ করার বিধান কার্যকর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে অনিবাসী কোম্পানির লভ্যাংশ আয়ের উপর একাধিকবার করারোপ হবে না। এখানে উল্লেখ্য যে, নিবাসী কোম্পানির লভ্যাংশ আয়ের ওপর একাধিকবার করারোপ রোধ করার বিধান গত বছর কার্যকর করা হয়েছিল। দ্বৈতকর প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে, যারা আগে দ্বৈতকর দিত তারা সুবিধা পাবে। তবে যাদের দ্বৈতকর দিতে হত না, তারা এই সিদ্ধান্ত থেকে কোন সুবিধা পাবেন না। আর যারা ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করেনা তাদের আগের মতই লভ্যাংশ আয়ের উপর ১৫% করে কর দিতে হবে। ৩। বোনাস লভ্যাংশের উপর কর আরোপঃ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করলে সেই লভ্যাশের উপর কোম্পানিকে ১৫% কর দিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে কোম্পানিগুলো বেশি বেশি নগদ লভ্যাংশ দিতে অনুপ্রাণিত হবে। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ফলে কোম্পানি ট্যাক্স এড়ানোর জন্য যদি বোনাস লভ্যাংশ না দেয় এবং একই সাথে নগদ লভ্যাংশ না বাড়ায় সেই ক্ষেত্রে লভ্যাংশ (বোনাস+নগদ) কমানোর কারনে শেয়ারের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এছাড়া যে কোন ধরনের ট্যাক্স কোম্পানির আয় কমিয়ে দিবে যার জন্য বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে কোম্পানি বেশি নগদ লভ্যাংশ দিলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে। ৪। রিটেইন আর্নিংস এবং রিজার্ভের উপর কর আরোপঃ কোনো বছরে কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস এবং রিজার্ভের সমষ্টি তার পরিশোধিত মূলধনের ৫০% এর বেশি হলে বাড়তি অংশের উপর ১৫% কর দিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে কোম্পানিগুলো বেশি বেশি নগদ লভ্যাংশ দিতে অনুপ্রাণিত হবে রিটেইনড আর্নিংস এবং রিজার্ভের উপর ট্যাক্স এড়ানোর জন্য যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ভাল। তবে যেই সকল কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস এবং রিজার্ভের সমষ্টি তার পরিশোধিত মূলধনের থেকে অনেক বড় তাদেরকে বড় অংকের ট্যাক্স দিতে হবে যার কারনে কোম্পানির আয় এবং সম্পদ কমে আসবে যার নেতিবাচক প্রভাব শেয়ারের দামে পড়বে। আর অনেক ভাল কোম্পানি সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারনের জন্য রিজার্ভ বড় করে এবং সেই টাকা বিভিন্ন প্রজেক্টে বিনিয়োগ করে। ভাল কোম্পানিগুলো রিজার্ভ থেকে ব্যবসা সম্প্রসারন করার কারনে তাদের আয়ও বৃদ্ধি পায় যার সুফল বিনিয়োগকারীরাও পেয়ে থাকেন যেহেতু শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পায় আয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে। বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির আর্থিক অবস্থা এবং শেয়ারের দাম দেখলেও আমরা সেটা দেখতে পাই। এখন কোম্পানিগুলো যদি রিজার্ভ ভেঙ্গে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে দেয় অথবা রিজার্ভ বড় থাকার কারনে ট্যাক্স দিতে হয় তাহলে কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকটা তৈরি হবে যার ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরাই হবে। ৫। টেক্সটাইল খাতে রপ্তানি প্রণোদনাঃ প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে চারটি খাত (ওভেন, নিট, সোয়েটার ও টেক্সটাইল) ৪% হারে প্রণোদনা পাচ্ছে সেগুলোর বাইরে থাকা অন্য সব খাতকে ১% হারে প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এজন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে আরও দুই হাজার ৮২৫ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ৬। বীমার ব্যবহার বৃদ্ধিঃ কৃষকদের জন্য পাইলট প্রকল্প হিসাবে শস্য বীমা এবং গবাদিপশু বীমা চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি কর্মচারীদের গ্রুপ বীমার আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৭। আবাসান খাতে কালো টাকা বিনিয়োগে কর হ্রাস এবং জমি, ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশনে ডিউটি এবং ফি কমানোঃ আবাসান খাত তথা প্লট ও ফ্ল্যাটে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ আগে থেকেই ছিল। তবে কালো টাকা বিনিয়োগে করহার বেশি ছিল যা কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া আবাসান খাতে স্ট্যাম্প ডিউটি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ৮। আইটি এবং টেলিকমিউনিকেশন খাতে শুল্ক হ্রাস-বৃদ্ধিঃ স্মার্ট ফোনের আমদানিতে শুল্ক ১০% থেকে বৃদ্ধি করে ২৫% করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বাইরে আইসিটি খাতের বিভিন্ন উপকরন আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে অথবা অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ফোনের সিম কার্ডের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ৫% থেকে বৃদ্ধি করে ১০% করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমের মোবাইল কল রেট এবং মোবাইল সিমের মাধ্যমে ব্যবহৃত ইন্টারনেটের দাম বাড়তে পারে। ৯। চামড়া ও পাদুকা শিল্পের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক হ্রাসঃ চামড়া ও পাদুকা শিল্পের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ১০। ঔষধ শিল্পে প্রণোদনা এবং শুল্ক হ্রাসঃ ক্যান্সার প্রতিরোধক ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। মেডিক্যাল গ্যাস প্রস্তুতকারী কাঁচামালের উপর ডিউটি ২০% থেকে কমিয়ে ১০% করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া তামাকজাত পন্যে ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রস্তাব এসেছে। মোটরসাইকেল আমদানি নিরুৎসাহিত করে দেশীয় মোটরসাইকেল উৎপাদন উৎসাহিত করতে উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণের শুল্ক বিবেচনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পুরো ব্যাপারটা আরও বিস্তারিত উদাহরনসহ বুঝার জন্য ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন। ভিডিওটিতে বাজেটের অন্যান্য পয়েন্ট এবং কিছু ক্রিটিকাল ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। Written By:Shihab Alam Khan Youtube Channel Link:www.youtube.com/financeschool শেয়ারনিউজ24
0 Comments
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
September 2024
Categories |