midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
স্বল্প সময়ে বেশি মুনাফার চমকপ্রদ লোভে পড়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অনেকেই নিয়েছেন মার্জিন ঋণ। ঋণ নিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা তো দূরের কথা! পুঁজি হারিয়েছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। ঋণের ভার ও চক্রবৃদ্ধি সুদের চাপে মার্জিন ঋণকে অনেকের কাছেই এখন একটা ফাঁদ। মার্জিন ঋণ হলো, গ্রাহক বা বিনিয়োগকারীকে শেয়ার কিনতে মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউস থেকে যে ঋণ দেওয়া হয়। সব হারিয়েও যেন রক্ষা নেই; চক্রবৃদ্ধি সুদে দেনা শোধ করতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। একদিকে মার্জিন ঋণের ফাঁদে দেউলিয়া হওয়া; অন্যদিকে ঋণ দেওয়ার সীমাহীন অনিয়ম। দুয়ে মিলে মার্জিন ঋণ এখন বিনিয়োগকারীদের গলার কাঁটা। তাই এ কাঁটা দূর করতে নতুন মার্জিন ঋণ আইন প্রস্তাব করেছে টাস্কফোর্স। আর নতুন আইন বাস্তবায়নে পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি কমবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, যাচাই-বাছাই ছাড়া দেদার ঋণ দেওয়া ও নেওয়াই কাল হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। তাদের কথা চিন্তা করে নতুন আইন প্রণয়ন করলে মার্জিন ঋণ আর ‘ফাঁদ’ হিসেবে থাকবে না।
২০১০ সালের পর থেকে মার্জিন ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা। তাই বাজারের এই গলার কাঁটাকে দূর করতে নতুন মার্জিন ঋণ আইন প্রস্তাব করেছে টাস্কফোর্স। আইন বাস্তবায়নের আগে মার্জিন ঋণের বর্তমান সমস্যা সমাধানের প্রয়োজন বলে জানান ব্রোকারেজ মালিকরা। জানতে চাইলে মিডওয়ে সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশিকুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘মার্জিন ঋণ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর জন্য খারাপ। ধরুন, আপনি ১০ লাখ টাকা নিয়ে বাজারে এলেন। ব্রোকার আপনাকে মার্জিন ঋণ হিসেবে আরও ১০ লাখ টাকা দিল। এখন আপনার হাতে মোট ২০ লাখ টাকা এলো। এতে সমস্যা হলো, যখনই ব্রোকার আপনাকে ১০ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে দিল তখন টেকনিক্যালি আপনার যত শেয়ার আছে, তার মালিকানার একটা অংশ ওই ব্রোকারের কাছে চলে আসে। আপনি তো টাকা এবং শেয়ার উভয়ের বিপক্ষেই ঋণ নিয়েছেন। আমাদের দেশের বাজার যদি ভালো থাকত তাহলে মার্জিন ঋণে যারা বিনিয়োগ করত, তাদের সমস্যা হতো না। মার্জিন ঋণে ১৫-১৬ শতাংশ সুদ দিতে হয়। বাজার তো আপনাকে ১০ শতাংশের ওপরে রিটার্ন দেয় না। তাহলে আপনি মার্জিন ঋণ নিয়ে, ওই ঋণের সুদ শোধ করবে কীভাবে?’ জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মার্জিন ঋণ সংস্কার ও মিউচুয়াল ফান্ড-সংক্রান্ত সুপারিশ ফাস্ট ট্র্যাক গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। মিউচুয়াল ফান্ড দেশের সব ক্ষেত্রে সহজলভ্য করতে ব্যাংক, অনলাইন মার্কেট প্লেস, মোবাইল অপারেটর কোম্পানি থেকে কিনতে পারবেন গ্রাহক। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ মার্জিন লোন বা বিনিয়োগ ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন বিনিয়োগকারী। ক্রয় করা শেয়ার ও ইউনিটের বিপরীতে নির্ধারিত সুদে এ ঋণ দিয়ে থাকে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস। তবে ঋণ দেওয়ার সীমা মানে না অনেক প্রতিষ্ঠান। কোনো কোনো সময় গ্রাহকের বিনিয়োগের বিপরীতে দশগুণ পর্যন্ত ঋণ দেয় বিভিন্ন ব্রোকারেজ। এর ফলে বাজারে ভয়াবহ নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হয়। ২০১০ সালেও মার্জিন ঋণের কারণে পুঁজিবাজারে বড় বিপর্যয় ঘটেছে। তখন মার্জিন ঋণ নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেনÑ এমন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৬৯ হাজার। আর তাদের মোট ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার ৭০ কোটি টাকা। তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পুঁজিবাজার সংস্কারে মার্জিন ঋণের খসড়া আইন প্রস্তাব জমা দিয়েছে টাস্কফোর্স। প্রস্তাবে ঋণসুবিধা পেতে হলে বিনিয়োগ থাকতে হবে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে কমপক্ষে ৬ মাসের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তা শেয়ার কিনতে পারবে না। এছাড়া ব্যক্তির ধারাবাহিক প্রতিনিয়ত আয় না থাকলে পাওয়া যাবে না এ ঋণ। এদিকে আইন বাস্তবায়নের আগে মার্জিন ঋণের বর্তমান সমস্যা সমাধানের প্রয়োজন বলে জানান ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘অলরেডি আমাদের এখানে পাহাড় সমান সমস্যা আছে। আমরা এটাকে ক্যান্সারিয়াস ডিজিস ফর দ্য মার্কেট বলে থাকি। কেউ বলে ১০ হাজার কোটি, কেউ বলে ২০ হাজার কোটি; তবে কাছাকাছি টাকা এরই মধ্যে নন-পারফর্মিং অ্যাসেটস হিসেবে আছে।’ বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারে মার্জিন ঋণ-সংক্রান্ত বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা কারসাজি করে তারা নানা গুজব ছড়ায়। এ কারণে না বুঝে মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কেনে। পরে প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার ফোর্স সেল করে; যাতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নতুন সংস্কার হলে বিনিয়োগকারীদের এ ঝুঁকি কমে যাবে। এ ছাড়া বাজারে অল্প বিনিয়োগ নিয়ে মার্জিন ঋণ গ্রহণ বড় রকমের ঝুঁকি তৈরি করে। এটাও বন্ধ হবে।’ বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পুঁজিবাজার যদি বেশি ওঠানামা করে তাহলে মার্জিন ঋণ ক্ষতিকর হতে পারে। আমাদের পুঁজিবাজার খুবই আনস্টেবল। সূচক কখনও উঠছে তো কখনও নামছে। এমন পুঁজিবাজার কখনও শক্তিশালী হয় না। আমাদের দেশের পুঁজিবাজার বিভিন্নভাবে ম্যানুপুলেট করা হয়। এমন বাজারে মার্জিন ঋণ নেওয়া বড় ধরনের ঝুঁকি। এতে বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। শক্তিশালী পুঁজিবাজারে মার্জিন ঋণ তেমন সমস্যার নয়।’ Source: Protidinerbangladesh
0 Comments
Leave a Reply. |
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
April 2025
Categories |