midway securities ltd.
স্টক * বন্ড * ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট * আইপিও * বাজার গবেষণা * ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট
বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজারের নেতিবাচক যে প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করতে গভর্নরের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় পুঁজিবাজারের সব পক্ষ। খুব শিগগিরই তার অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো।
আজ মঙ্গলবার পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় শীর্ষক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোশতাক আহমেদ সাদেক সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক হলো মানি মার্কেটের রেগুলেটর। পুঁজিবাজারে মানি মার্কেটর অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। কিছু হলেই তারা একটি সার্কুলার দিয়ে দেয়। যা নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়ে। এই অহেতুক সার্কুলার যাতে বাংলাদেশ ব্যাংক না দেয়, সেই অনুরোধ আমরা করছি। মোশতাক আহমেদ বলেন,
0 Comments
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হাডেলবার্গ সিমেন্টকে মেঘনা এনার্জি লিমিটেডের ৯৯.৯৯ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক মেঘনা এনার্জির ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫৭টি শেয়ার হস্তান্তরের অনুমতি দিয়েছে। উল্লেখ্য, মেঘনা এনার্জি লিমিটেড একটি বেসরকারি কোম্পানি। এটি বাংলাদেশে অর্ন্তভুক্ত। এই কোম্পানিটি ছোট বিদ্যুৎ প্লান্ট হিসাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ করে। অর্থসূচক নামমাত্র শেয়ার ধারণ করে পর্ষদসহ কোম্পানির সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখার সুযোগ শেষ হতে যাচ্ছে। আগামীতে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের থেকে অন্তত একজনকে পরিচালক রাখতে হবে। শেয়ার ধারণের আনুপাতিক হারে পরিচালক মনোনীত করার সুযোগও তৈরি হবে। আর অন্তত ৫ শতাংশ শেয়ার ধারণকারী কোনো প্রতিষ্ঠানও পরিচালক পদে কাউকে মনোনীত করতে পারবে। আত্মীয় বা স্বার্থ-সংশ্নিষ্টদের নামকাওয়াস্তে স্বতন্ত্র পরিচালক করা যাবে না। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নীতিমালার সংশোধন করে এমন নিয়ম চালুর প্রস্তাব করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর উদ্দেশ্য স্বচ্ছতা ও প্রতিনিধিত্বশীল পর্ষদ গঠন ও কোম্পানিতে সুশাসন নিশ্চিতে পর্ষদের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা। কমিশনের এ-সংক্রান্ত সংশোধন প্রস্তাব এরই মধ্যে জনমত যাচাইয়ের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে, যা সংস্থার ওয়েবসাইটেও পাওয়া যাচ্ছে। কমিশন কর্মকর্তারা জানান, সংশ্নিষ্ট স্টেকহোল্ডারসহ জনগণের কাছ থেকে সংশোধনের বিষয়ে আরও প্রস্তাব বা পরামর্শ পাওয়া গেলে তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে কমিশন। এরপর চূড়ান্ত করে গেজেট করা হবে। গেজেটের পর নতুন নীতিমালা অনুসরণ করা তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির জন্য বাধ্যতামূলক হবে। তবে এসব সংশোধনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সংগঠন বিএপিএলসির সভাপতি আজম জে চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচনী বছর হওয়ায় আশায় বুক বেঁধে ছিলেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। বছরের প্রথম সপ্তাহে পুঁজিবাজারের পালে হাওয়াও লেগেছিলো। ওই সপ্তাহে তিন কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচকও বড়েছিল প্রায় ৭৪ পয়েন্ট। তবে এটি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। আবারও কপালে ভাঁজ পড়েছে বিনিয়োগকারীদের। বছরের শুরুতে পুঁজিবাজারে আলোর ঝলকানি দিয়ে ফের হোঁচট খেয়েছে বাজার। টানা কয়েকদিনের দরপতনে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ২৩৮ পয়েন্ট। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী ও সংশ্লিষ্টদের। বাজারের নিকট ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ের পাশাপাশি হতাশা প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীদের অনেকেই। এই হতাশার বিপরীতে আলোর স্বপ্ন বুনতে আগামীকাল বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন বৈঠকে বসছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ডিএসইর মতিঝিল অফিসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে অর্থসূচককে জানিয়েছেন বিএমবিএ সভাপতি মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আগামীকাল ডিএসইতি বিএমবিএ ও ডিবিএ যৌথভাবে বৈঠকে বসবো। বৈঠকে বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এদিকে ডিএসই গত ৭ কার্যদিবস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৬ কার্যদিবসে ২৩৮ পয়েন্ট সূচক কমেছে। এর মধ্যে ১ কার্যদিবসে ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। গত ৭ কার্যদিবস আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক অবস্থান করছিল ৬ হাজার ৩০৩ পয়েন্টে। আর আজ সোমবার কার্যদিবস শেষে এর অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৮ পয়েন্টে। ৭ কার্যদিবস আগে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মার্কেট ক্যাপিটাল ছিল ৪ লাখ ২৭ হাজার ২৫১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ৭ কার্যদিবস শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ১৫ হাজার ১৪২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সেই হিসেবে আলোচ্য সময়ে মার্কেট ক্যাপিটাল কমেছে ১২ হাজার ১০৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সোমবার ডিএসইতে মোট ৪০৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৩৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ২৫৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টি কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ৬০ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৩৭৬ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ২২৪ পয়েন্টে। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৭২৩ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া ২৩২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ১৬৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির শেয়ার দর। অর্থসূচক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সমন্বয় করা হয়েছে। এতে নতুন করে ১৯ কোম্পানিকে যুক্ত করা হয়েছে; আর একটি কোম্পানি ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যা আগামী ২১ জানুয়ারি কার্যকর হবে।
ডিএসইএক্স সূচকে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ১৯টি কোম্পানি হলো: ফরচুন সুজ, আমরা নেটওয়ার্কস, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রেকিট বেনকিজার, নুরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, কে অ্যান্ড কিউ, আজিজ পাইপস, নিটল ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, সমতা লেদার কমপ্লেক্স, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, জিল বাংলা সুগার, ইমাম বাটন, মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, শ্যামপুর সুগার, মুন্নু জুট স্টাফলার্স এবং মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ। অপর সূচক ডিএসই-৩০ সমন্বয় করা হয়েছে। এতে ৩ কোম্পানিকে বাদ দিয়ে ৩টি কোম্পানিকে অনর্ভুক্ত করা হয়েছে। অন্তর্ভুক্ত হওয়া কোম্পানি হচ্ছে ইস্টার্ন ব্যাংক, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ। বাদ পড়া কোম্পানি হচ্ছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, পূবালী ব্যাংক এবং যমুনা অয়েলকোম্পানি লিমিটেড। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন জমা নেওয়া শুরু হবে । চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। কোম্পানিটিকে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ২ কোটি শেয়ার ইস্যু করার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। ৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ১২ টাকা ৪৫ পয়সা। এছাড়া, বিগত চার বছরের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) গড় হারে হয়েছে ৯১ পয়সা। সূত্র জানায়, কোম্পানিটি যন্ত্রপাতি ক্রয়, ভবন নির্মাণ এবং আইপিওর খরচ বাবদ এ টাকা ব্যয় করবে। উল্লেখ, কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড, আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং সিএপিএম এ্যাডভাইজরি লিমিটেড। অর্থসূচক টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর অবশেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সূচক। তবে সূচকের উত্থান হলেও লেনদেনে আরও অবনতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে প্রায় সাত পয়েন্ট। এর মধ্যে টেলিযোগাযোগ খাতের গ্রামীণফোনের দর বেড়েছে চার টাকা ৬০ পয়সা। সূচককে পতনের হাত থেকে বাঁচিয়েছে গ্রামীণফোন। এছাড়া বিএটিবিসি, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জ সুরমার দরবৃদ্ধিও সূচক ইতিবাচক করতে সহায়তা করছে।
নতুন বছরে বাজার ভালো হবে পুঁজিবাজারসংশ্লিস্ট সবার এমন প্রত্যাশা থাকলেও এখন পর্যন্ত তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ বাজার এখন পতনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে। যেসব বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে নতুন এসেছেন বা এখনও বাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা হয়নি। তারা এ সময় বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কারণ এখন অনেক শেয়ারের দর কম বা বিনিয়োগ উপযোগী অবস্থানে আছে। বিশেষ করে ব্যাংক ও আর্থিক খাত। এসব কোম্পানি সামনে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের পাশাপাশি লভ্যাংশ ঘোষণা করবে। আর এসব প্রতিষ্ঠানের ভালো লভ্যাংশ ঘোষণার ইতিহাস আছে। কাজেই এ মুহূর্তে শেয়ারদর না বাড়লেও দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কারণ ভালো লভ্যাংশ লাভের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। কাজ্ইে ভালো কোম্পানি দেখেশুনে বিনিয়োগ করে দু-এক মাস অপেক্ষা করুন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকালও লেনদেনে নেতৃত্ব দিয়েছে প্রকৌশল খাত। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন না বাড়লেও মোট লেনদেনের ২০ শতাংশ হয় প্রকৌশল খাতে। এ খাতের ৪৭ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। এ খাতের বিডি অটোকার গতকালও দরবৃদ্ধির তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। ব্যাংক খাতে লেনদেন হয় মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশ। ব্যাংক এশিয়া দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশে অবস্থান করে। এরপর বস্ত্র এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয় ১৩ শতাংশ করে। বস্ত্র খাতে ৩০ শতাংশ শেয়ারের দর ইতিবাচক ছিল। মতিন স্পিনিং মিল ও এপেক্স স্পিনিং দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশে উঠে আসে। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৫৪ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। এ খাতের গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল দরবৃদ্ধির শীর্ষ দুইয়ে অবস্থান করে। লেনদেনে নেতৃত্ব দেওয়া স্কয়ার ফার্মার প্রায় ২৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ইফাদ অটোসের ২০ কোটি টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্স ১৩ কোটি টাকার, আমরা নেট ১২ কোটি, ন্যাশনাল টিউবসের ১০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। Courtesy: sharebiz.net পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ যৌথ কোম্পানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় বিদেশি একটি কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে এ কোম্পানি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্র মতে, ফসরক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি কোম্পানি করবে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। যৌথ মালিকানা এ কোম্পানির ৫০ শতাংশ শেয়ার থাকে বার্জারের। বাকি ৫০ শতাংশের মালিক হবে ফসরক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। কোম্পানিটি অবকাঠামো নির্মাণ সামগ্রী, কেমিক্যাল ও প্রযুক্তি নির্মাণ ও বাজারজাত করবে। উল্লেখ, ২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বার্জার পেইন্টস লিমিটেড। এই কোম্পানির ৯৫ শতাংশ শেয়ারের উদ্যোক্তাদের নিয়ন্ত্রণে। বাকি শেয়ারের ২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে, ২ দশমিক ০৬ বিদেশি ও দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। কোম্পানিটি সর্বশেষ ১৫ মাসের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ৬০০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে শেয়ারহোল্ডারদের। একই সময়ে ১৫ মাসে কোম্পানিটির এককভাবে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১০৩ টাকা ২০ পয়সা। আগের ১৫ মাসে যা ছিল ৭৩ টাকা ৭০ পয়সা। আর সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১০৯ টাকা। এর আগের ১৫ মাসে যা ছিল ৭৭ টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ২৪৯ টাকা ৫০ পয়সা। এর আগের ১৫ মাসে যা ছিল ১৮৬ টাকা ৪০ পয়সা। অর্থসূচক প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে কুইন সাউথ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডকে দেড় কোটি সাধারণ শেয়ার ইস্যু ও বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ৭ জানুয়ারি আইপিওর চাঁদা গ্রহণ শুরু করে কোম্পানিটি। চলবে আগামীকাল পর্যন্ত।
বিএসইসির ৬১৫তম সভায় বস্ত্র খাতের কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে কমিশনের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে শেয়ার বেচে বাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করবে প্রতিষ্ঠানটি। এ অর্থ তারা ওয়্যারহাউজ নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ক্রয়, কারখানা আধুনিকায়ন ও ব্যাংকঋণ পরিশোধে ব্যয় করবে। কিছু অর্থ আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয়নির্বাহে খরচ করা হবে। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। নিরীক্ষক মাফেল হক অ্যান্ড কোম্পানি। বিএসইসি জানায়, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১৬ টাকা ২০ পয়সায়। গত পাঁচ বছরে শেয়ারপ্রতি গড় আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৪২ পয়সা। প্রসপেক্টাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, পাঁচ বছরের ব্যবধানে কুইন সাউথ টেক্সটাইলের বিক্রি ও মুনাফা বেড়েছে। সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে সে বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির বিক্রি ছিল ১৬৭ কোটি টাকা। গ্রস মুনাফা ১৬ কোটি ৫০ লাখ ও করপরবর্তী মুনাফা ৬ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার ৯৮২ টাকা। কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, কুইন সাউথ টেক্সটাইল ২০০৩ সালে যাত্রা করে। কোম্পানিটি সোয়েটার, নিটিং ও ওয়েভিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিভিন্ন ধরনের রঙিন সুতা তৈরি করে। তাদের কারখানা ঢাকা ইপিজেডে। মোট কর্মী সংখ্যা ৮৫৪। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। বর্তমানে তাদের পরিশোধিত মূলধন ৮৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আইপিওর পর তাদের পরিশোধিত মূলধন দাঁড়াবে ১০০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। পুঁজিবাজারের সামগ্রিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগ ব্যবস্থা তুলে ধরার জন্য সরকারের উন্নয়ন মেলায় অংশ নেবে পুঁজিবাজার স্টেকহোল্ডাররা। আগামী ১১ থেকে ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মেলায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নেতৃত্বে অন্য স্টেকহোল্ডাররা অংশ নেবে। আজ বুধবার এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। মতিঝিলে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশে (সিডিবিএল), মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ (ডিবিএ) অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, আমরা পুঁজিবাজারে কি ধরণের উন্নয়ন কার্যক্রম করছি- তা স্টেকহোল্ডারদেরকে নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাই। এ বছর আমরা ১৩টি জেলার উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করছি। মেলায় সফল অংশগ্রহণের জন্য স্টেকহোল্ডারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার জন্য সিডিবিএল, চট্টগ্রাম ও সিলেটের জন্য সিএসই, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশালের জন্য আইসিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রংপুরের জন্য এমটিবি সিকিউরিটিজ, ময়মনসিংহের জন্য মশিউর সিকিউরিটিজ, নরসিংদির জন্য আমানত শাহ সিকিউরিটিজ, গাজীপুরের জন্য আইডিএলসি, নারায়নগঞ্জের জন্য লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালীর জন্য ব্র্যাক ইপিএল সিকিউরিটিজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে মেলাতে ওই জেলায় অবস্থিত সব সিকিউরিটিজ এক সঙ্গে অংশ নেবে। তিনি বলেন, উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে প্রান্তিক জনগণের কাছে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। যা আমরা কাজে লাগাতে চাই। এখানে ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে। এসময় সিডিবিএলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা এই মেলার মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উন্নয়নকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরতে চাই। যাতে তাদের মাঝে সৃষ্ট ভুল ধারণাগুলো দুর করা সম্ভব হয়। এর সাথে পুঁজিবাজারকে সঠিকভাবে তুলে ধরা যায়। ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় পুঁজিবাজার’ এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এবারের মেলাতে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় অর্থনীতির উন্নয়নে প্রযুক্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। মেলা সফল করতে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমানকে আহবায়ক, বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. জোবায়ের উদ্দিন ভূইয়া সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএমবিএর সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ, ডিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শরিফ আনোয়ার হোসেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জহিরুল ইসলাম, বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. জোবায়ের উদ্দিন ভূইয়া, আইসিবির মহাব্যবস্থাপক মো. কামাল হোসেন গাজী, ডিএসইর মহাব্যবস্থাপক মো. সামিউল ইসলাম, ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান, সিএসইর উপ-মাহব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক প্রমুখ। শেয়ারবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে টাকা তুলতে যাচ্ছে ৯ কোম্পানি। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তহবিল সংগ্রহের জন্য কোম্পানিগুলো রোডশো সম্পন্ন করে বর্তমানে কোম্পানিগুলো নিয়ন্ত্রক সংস্থার চুড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসে বা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দুটি কোম্পানির আইপিও অনুমোদন পাবে।
অনুমোদনের বিশেষ সম্ভাবনায় রয়েছে রয়েছে আমান কটন ফাইবার্স ও বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড। অন্য কোম্পানিগুলো হলো- বেঙ্গল পলি অ্যান্ড পেপার মিলস, ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেল্টা হসপিটাল, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস, এডিএন টেলিকম লিমিটেড, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন ও রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। আমান কটন ফাইব্রার্স লিমিটেড: বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আমান কটনের সর্বোচ্চ দর নির্ধারিত হয় ৫৬ টাকা। পরবর্তীতে কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস ৪০ টাকা নির্ধারিত হয়। এরফেলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার ১০ শতাংশ কম দরে অর্থাৎ ৩৬ টাকা দরে আইপিওতে বরাদ্দ পাবে। কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ৮০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। সংগৃহীত অর্থ কারখানার নতুন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ক্রয়, ব্যাংকঋণ পরিশোধ এবং আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ বাবদ ব্যয় করবে। কোম্পানিটি। ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটিড: সুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের কাট-অফ প্রাইস নির্ধারিত হয় ৮০ টাকায়। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ১০ শতাংশ বা ৪ টাকা কমিয়ে প্রতিটি শেয়ার ৭২ টাকা দরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১২৫ কোটি সংগ্রহ করবে কোম্পানিটি। বেঙ্গল পলি অ্যান্ড পেপার লিমিটেড : বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে তালিকাভু্ক্তির জন্য গত বছরের ৯ অক্টোবর ‘রোড শো’ করেছে। কোম্পানিটিকে আইপিওতে আনতে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব নিয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস্ লিমিটেড। আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড রেজিস্ট্রার টু দি ইস্যুর দায়িত্বে রয়েছে। কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ৫৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ : গত বছর ১৮ অক্টোবর রোডশো সম্পন্ন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বাজার থেকে ৪০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। কোম্পানিটিকে আইপিওতে আনতে ইস্যু ম্য্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড ও ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। ডেল্টা হসপিটাল লিমিটেড : গত ৬ অক্টোবর রোড শো সম্পন্ন করা প্রতিষ্ঠানটি সংগ্রহ করবে ৫০ কোটি টাকা। গত ৩০ জুন ২০১৬ হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদনে বাজারে আসতে চায় কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৮৮ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৪০ টাকা। কোম্পানিটিকে আইপিওতে আনতে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব নিয়েছে প্রাইম ফিন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস : টাকা উত্তোলনে ২৪ অক্টোবর রোডশো সম্পন্ন করা প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলন করবে ৭০ কোটি টাকা। কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব রয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। রানার অটোমোবাইলস : দেশীয় অটোমোবাইলস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি ১৯ অক্টোবর রোডশো সম্পন্ন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলন করবে ১০০ কোটি টাকা। এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড (ইপিজিএল) : বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায় কোম্পানিটি। উত্তোলিত অর্থের বড় অংশ ব্যয় করা হবে কোম্পানির এলপি গ্যাস ব্যবসার সক্ষমতা বাড়াতে। গত বছরের ১৫ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটি রোডশো সম্পন্ন করেছে। এডিএন টেলিকম লিমিটেড : বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে এজন্য গত ১৯ অক্টোবর, বৃহষ্পতিবার সন্ধা ৭ টায় লা মেরিডিয়ানে রোডশো সম্পন্ন হয়েছে। কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং রেজিস্টার টু দি ইস্যু হিসেবে কাজ করছে রুটস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আজিজ পাইপস লিমিটেড ক্যাটাগরি পরিবর্তন করেছে। কোম্পানিটি ‘জেড’ থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কোম্পানিটি ৩০ জুন, ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরে ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী আজ ১০ জানুয়ারি থেকে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের পর লেনদেনের প্রথম ৩০ দিন কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে কোনো ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে না। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৭ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৭ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট দায় (ঋণাত্মক এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৫৩ টাকা ৭১ পয়সায়। এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১১ পয়সা ইপিএস দেখিয়েছে আজিজ পাইপস। আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ১৪ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর এর ঋণাত্মক এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৫৩ টাকা ৫৯ পয়সায়। ২০১৬ সালের ৩০ জুন ১৮ মাসে সমাপ্ত হিসাব বছরে এর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৪১ পয়সা। এ সময়ের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। জুন ক্লোজিংয়ের বাধ্যবাধকতায় সেবার ১৮ মাসে হিসাব বছর গণনা করেছে আজিজ পাইপস। ডিএসইতে সর্বশেষ ১৬৫ টাকায় আজিজ পাইপসের শেয়ার লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ১৬৯ টাকা ৫০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ৬১ টাকা। ১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে আসা আজিজ পাইপসের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। পুঞ্জীভূত লোকসান ৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের ৩৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ ও বাকি ৫৮ দশমিক শূন্য ৮৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে। উন্নত বিশ্বের করপোরেট সুশাসন নীতিমালার আদলে বাংলাদেশের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য করপোরেট গভর্ন্যান্স কোডসের (সিজিসি) খসড়া প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রস্তাবিত নিয়মে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে ব্যাপক ও বিস্তারিত ডিসক্লোজারের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে অনেক বেশি তথ্য প্রদান করতে হবে। ব্যাখ্যা, নোট ও অন্যান্য উপায়ে কোম্পানির ব্যবসার প্রকৃত অবস্থা উপস্থাপনের এ পরিকল্পনা বিনিয়োগকারীদের জন্য মৌলভিত্তি বিশ্লেষণ অনেক সহজ করবে বলে আশা করছেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা।
প্রস্তাবিত করপোরেট গভর্ন্যান্স কোডস অনুসারে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির বার্ষিক ও প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস ১৯৮৭, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট (এফআরএ) ২০১৫ এবং আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় হিসাবমান অনুসরণ করে প্রণয়ন করতে হবে। বিএসইসির প্যানেলভুক্ত নিরীক্ষকের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি নিরীক্ষা ফার্ম একাধারে সর্বোচ্চ তিন বছর কোনো কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করতে পারবে। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, নিরীক্ষক ও অডিট ফার্মের পার্টনারকে কোম্পানি আইন ১৯৯৪, এফআরএ, সিকিউরিটিজ ও অন্যান্য আইন অনুসারে নিরীক্ষা করতে হবে। প্রান্তিক প্রতিবেদনসংক্রান্ত পর্ষদ সভার তিনদিন আগে এ বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমিশনকে জানাতে হবে। প্রান্তিক প্রতিবেদনসংক্রান্ত কনফারেন্স আয়োজন বা আর্নিং কলের বিষয়টিকে ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে। কোনো কোম্পানি আর্নিং কল করতে চাইলে তা কনফারেন্স আয়োজনের তিনদিন আগে কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকে (বাংলা ও ইরেজি) এ-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে। প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশের সাতদিনের মধ্যেই কনফারেন্সটি আয়োজন করতে হবে এবং সেখানে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ও সুশাসন বিভাগের প্রধানকে (এইচআইএসি) অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে সিজিসির খসড়ায় বলা হয়েছে, জীবন বীমা কোম্পানি বাদে অন্য তালিকাভুক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিক শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকে (বাংলা ও ইরেজি) তা প্রকাশ করতে হবে। প্রান্তিক প্রতিবেদনে গুরুত্বপূর্ণ বিচ্যুতি থাকলে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। অন্যদিকে জীবন বীমা কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রান্তিক শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন জমা ও প্রকাশ করতে হবে। প্রস্তাবিত আইনে হিসাব বছর শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে জীবন বীমা কোম্পানি বাদে অন্য কোম্পানিগুলোর বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। সেসঙ্গে নিরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমিশনের কাছে নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। আর জীবন বীমা কোম্পানিগুলোকে হিসাব বছর শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করতে হবে। এদিকে উপযুক্ত কারণ ও জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় কোম্পানি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা ও জমা দেয়ার সময়সীমা বাড়াতে পারবে কমিশন। তবে মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না। বার্ষিক প্রতিবেদনসংক্রান্ত পর্ষদ সভার সাতদিন আগে স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমিশনকে এ-সংক্রান্ত তথ্য জানাতে হবে। বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) ১৪ দিন আগে শেয়ারহোল্ডারদের কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। পাশাপাশি কোম্পানির ওয়েবসাইটেও তা প্রকাশ করতে হবে। রেকর্ড ডেটের ৪৫ দিনের মধ্যে এজিএম আয়োজন করতে হবে। বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আয়োজনের ২১ দিন আগে এবং এজিএম আয়োজনের ১৪ দিন আগে স্টক এক্সচেঞ্জ ও শেয়ারহোল্ডারদেও এ-সংক্রান্ত নোটিস পাঠাতে হবে। পাশাপাশি দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক (বাংলা ও ইরেজি) ও কোম্পানির ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করতে হবে। স্টক এক্সচেঞ্জের সুপারিশ ও কমিশনের অনুমোদনক্রমে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এজিএম আয়োজন করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ইলেকট্রনিক অ্যাটেনডেন্স ও ভোটিং সুবিধা থাকতে হবে। কোম্পানির নিবন্ধিত কার্যালয়ের আওতাধীন নগর, শহর কিংবা এলাকায় এজিএম আয়োজন করতে হবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় কোম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের অনুমোদনক্রমে অন্য স্থানে এজিএম আয়োজন করা যাবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সাধারণ সভা আয়োজন ও এ-সংক্রান্ত কার্যবিবরণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ (আইসিএসবি) গৃহীত বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়াল স্ট্যান্ডার্ড (বিএসএস) ২ ও ৩-এর বিধি অনুসরণ করতে হবে। তাছাড়া লভ্যাংশের ক্ষেত্রে কোম্পানিকে বিএসএস-৪ বিধির আওতায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে। যদি উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাদ দিয়ে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়, তাহলে কোম্পানির পর্ষদকে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ারের পরিমাণ ও সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশের পরিমাণ মূল্যসংবেদনশীল তথ্য হিসেবে প্রকাশ করতে হবে। এক্ষেত্রে পর্ষদ সভার তারিখ থেকে এজিএমের তারিখ পর্যন্ত এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার হস্তান্তর কিংবা ছেড়ে দেয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বলবত্ থাকবে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক ও আনুষঙ্গিক তথ্য প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক হলেও প্রস্তাবিত আইনে এর আওতা ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করা হয়েছে। এর মধ্যে কোম্পানির ব্যবসার বিস্তারিত তথ্য, ছবিসহ কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের (এমডি ও সিইও, কোম্পানি সচিব, সিএফও, এইচআইএসি, এইচআইসিটি) প্রোফাইল, কোম্পানির বিভিন্ন উপকমিটির তালিকা ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ, স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের শর্তাবলি, পর্ষদ ও শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের আচরণবিধি, নন-এক্সিকিউটিভ পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালকদের বেতন-ভাতার তথ্য, সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন, প্রান্তিক ও বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনসংক্রান্ত সভার নোটিস ও বিবরণী, সর্বশেষ ছয়টি প্রান্তিক ও পাঁচটি বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের বিস্তারিত তথ্য, সিএসআরসংক্রান্ত তথ্য, সব ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য, এজিএম-ইজিএমের নোটিস ও এজেন্ডা, সাবসিডিয়ারি কিংবা সহযোগী কোম্পানির আর্থিক বিবরণী, পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনের তথ্য, একীভূতকরণ-অধিগ্রহণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, আইপিও-রাইট ইস্যুর প্রসপেক্টাস, লভ্যাংশ নীতি, লভ্যাংশ দেয়া হয়নি এমন শেয়ারহোল্ডারদের তালিকা, পদত্যাগকৃত পরিচালক ও শীর্ষ নির্বাহীদের তালিকা, কোম্পানি, পরিচালক ও শীর্ষ নির্বাহীদের সব ধরনের আইন নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা লঙ্ঘনের তথ্য, শেয়ারধারণের বিস্তারিত তথ্য, উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার লেনদেনের যাবতীয় তথ্য ও করপোরেট সুশাসন পরিপালনের তথ্য তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির বহিঃনিরীক্ষকের বিষয়ে সিজিসিতে বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির বহিঃনিরীক্ষক সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ভ্যালুয়েশন, ফিন্যান্সিয়াল ইনফরমেশন সিস্টেম ডিজাইন অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন, কোম্পানির বুককিপিং ও আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত, ব্রোকার-ডিলার সেবা, অ্যাকচুরিয়াল সার্ভিস, অভ্যন্তরীণ ও বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম, সিজিসি পরিপালনসংক্রান্ত সার্টিফিকেটসহ স্বার্থগত দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে, এমন কোনো কার্যক্রম করতে পারবে না। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট বহিঃনিরীক্ষক ফার্মের পার্টনার ও কর্মীদের সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার ধারণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যরা (পুত্র, কন্যা, স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন, জামাতা-পুত্রবধূ) সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারবে না। তাছাড়া কোম্পানির এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য বহিঃনিরীক্ষকের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মৌলভিত্তি বিশ্লেষণ সহজতর করতে নিরীক্ষিত, অনিরীক্ষিত সব আর্থিক প্রতিবেদনে সংযুক্তি হিসেবে কোম্পানির কার্যক্রম, তারল্য, নগদপ্রবাহ, সচ্ছলতা, মুনাফা ও ভ্যালুয়েশনের সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সব আর্থিক রেশিও উপস্থাপন করতে হবে। উল্লেখ্য, খসড়া সিজিসিতে ডিসক্লোজার সম্পর্কিত পূর্ববর্তী কোনো বাধ্যবাধকতার অবসায়নের প্রস্তাব নেই। বিনিয়োগকারী ও বাজারের স্বার্থে এগুলোকে আরো ব্যাপক ও বিস্তৃত করা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বণিক বার্তাকে বলেন, প্রস্তাবিত সিজিসি বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর আদলে করা হয়েছে। তা বাস্তবায়নের আগে আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো এত ব্যাপক ডিসক্লোজারে কতটা সক্ষম, এগুলোও বিবেচনা করতে হবে। ছোট কোম্পানিগুলোর ব্যয়ও বাড়বে। আমরা তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তাদের মতামত চেয়েছি। সবার কাছ থেকে পাওয়া মতামত একত্র করে বিএসইসির কাছে পাঠানো হবে। এদিকে বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সিজিসি পরিপালনের প্রাথমিক সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও এক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয়া হতে পারে। ডিসক্লোজারের পরিধি বিবেচনা করে এটি পরিপালনের জন্য কোম্পানিগুলোকে কমপক্ষে দুই বছর সময় দিতে চায় বিএসইসি। প্রস্তাবিত সিজিসি বাস্তবায়ন হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে সুশাসন নিশ্চিত হবে এবং মৌলভিত্তি বিশ্লেষণে বিনিয়োগকারীরা পর্যাপ্ত তথ্য পাবেন বলে মনে করছেন দেশের আর্থিক বিশ্লেষকরা। bonikbarta.net দেশে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যাংক রয়েছে। তারপরও এ খাতে আসছে নতুন একাধিক ব্যাংক। এ অবস্থায় টিকে থাকতে বেশ কিছুদিন ধরে মার্জার (একীভূতকরণ) নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে শরিয়াহভিত্তিক চার ব্যাংক। এ ব্যাংকগুলোর সিংহভাগ শেয়ার এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকায় মার্জার প্রক্রিয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে গ্রুপটি। গ্রুপটির হাত ধরে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের মতো আরও একটি শক্তিশালী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে তা এখনই নয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে এ উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মার্জার এখন সময়ের দাবি। যারা আগে শুরু করবেন, তারা এগিয়ে থাকবেন। সেক্ষেত্রে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো দিয়ে শুরু হলে পরে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও উৎসাহ দেখাবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) পরিচালিত এক গবেষণা জরিপে দেশের ৭২ শতাংশ ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যাংক মার্জার বা কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে, বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) ছাড়া বাকি চারটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক মার্জার করার চিন্তা করছেন উদ্যোক্তা গ্রুপটি। এ প্রসঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় একজন ব্যাংকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেয়ার বিজকে বলেন, দেশে ব্যাংকের সংখ্যা অতিরিক্ত, করপোরেট ট্যাক্স বেশি। অন্যদিকে পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় পরিচালন ব্যয়ও বেশি। এমন পরিস্থিতিতে আয় বাড়ানোর জন্য চট্টগ্রামভিত্তিক গ্রুপটি চারটি ব্যাংক মার্জার করা হতে পারে। তবে এখনই তা সম্ভব হচ্ছে না। ধীরে ধীরে এ কাজটি সম্পাদন করা হবে বলে জানান তিনি। যদিও এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলতে রাজি হননি ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালকরা। তবে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাবু শেয়ার বিজকে বলেন, আমরা ব্যাংকগুলোতে কেবল বিনিয়োগ করেছি। আপাতত মার্জ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে ব্যাংকগুলোতে পেশাদার পর্ষদ আছে। তারা যখন যে পদক্ষেপ নিতে হয়, তা যথাযথভাবে নেবেন। এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের সঙ্গে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাতে মার্জার ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি শেয়ার বিজকে বলেন, শরিয়াহ বা সাধারণ খাতের কোনো ব্যাংকের জন্যই মার্জারে আইনি কোনো বাধা নেই। এটা উদ্যোক্তা বা শেয়ারহোল্ডারদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। যেহেতু শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মালিক প্রায় একই শিল্প গ্রুপের, সেহেতু এক ছাদের নিচে ব্যাংকগুলো এলে কোনো ক্ষতি দেখছি না। এর ফলে সামগ্রিক অর্থনীতিতেও কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না বরং ভালো হবে। অন্যদিকে কর্মসংস্থান তৈরিতেও কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন বিশিষ্ট এই ব্যাংকার। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেশের ব্যাংকিং জগতে ক্যামেলস রেটিংয়ের জনক হিসেবে পরিচিত মুরশিদ কুলি খান শেয়ার বিজকে বলেন, তুলনামূলক এত ব্যাংক বিশ্বের কোথাও নেই। এমন পরিস্থিতিতে কিছু ব্যাংক মার্জার হলে, তা হবে যথার্থ উদ্যোগ। তবে ব্যাংকের আকার বাড়লে ব্যাংকারদের দক্ষতাও বাড়াতে হবে। এর ফলে নন-পারফর্মিং লোন কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ ডেপুটি গভর্নর। জানা গেছে, গ্রুপটি শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত এসআইবিএল, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত। গ্রুপটি অর্থাৎ ব্যাংক তিনটির অধিকাংশ শেয়ার ধারণকারীরা অতি সহজেই মার্জার করতে পারবে। তবে শরিয়াহভিত্তিক আরেক ব্যাংক ইউনিয়ন ব্যাংক মার্জার করা কঠিন হয়ে যাবে। চতুর্থ প্রজšে§র এ ব্যাংকটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়। বড় শেয়ারহোল্ডাররা চাইলে ব্যাংকটি উল্লিখিত তিনটি ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাকুইজেশন করতে পারেন। চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী যদি এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাহলে দেশে শরিয়াহ মোতাবেক স্বতন্ত্র ব্যাংক থাকবে চারটি। সেগুলো হলোÑইসলামী ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। এগুলোর মধ্যে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার কিনে নিয়ম মেনে ব্যাংকটির পর্ষদে বসতে পারে চট্টগ্রামের ওই শিল্প গ্রুপটি। পরে চারটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে মার্জার করে নিতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। জানা গেছে, দিন দিন ইসলামী ব্যাংকগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সুদভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের পরিবর্তে ইসলামী ধারার ব্যাংকিংয়ের প্রতি মানুষের বাড়ছে আগ্রহ। অন্যদিকে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মুনাফাও বেশি। বিভিন্ন সময় বিশ্বব্যাপী দুই হাজার ১০০টির মতো ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো ইসলামী ব্যাংক দেউলিয়া বা বন্ধ হয়নি। এসব দিক বিবেচনা করে এস আলম ইসলামী ব্যাংকিংয়ে বেশি আগ্রহী হয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রুপটির সঙ্গে যুক্ত এমন কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেয়ার বিজকে বলেন, একাধিক ব্যবসায়িক মুনাফা নয়, সমাজ উন্নয়ন ও মানবতার সেবায় ব্যাপক ভূমিকা রাখতে চান সাইফুল আলম মাসুদ। ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের নানা সামাজিক কার্যক্রম চলছে। এসব কার্যক্রম দেশব্যাপী প্রসারিত করতে গ্রুপটির কর্ণধাররা ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। পরিচালন ব্যয় কমাতে মার্জারের প্রতি গ্রুপটির উদ্যোক্তাদের বেশ আগ্রহও আছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যাংকার ও পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, একীভূতকরণ সব সময় খারাপ হয় না। এর ইতিবাচক দিকগুলো দেখতে হবে। বিশ্বায়নের অংশ হতে হলে কয়েকটি ব্যাংককে মার্জারে যেতে হবে। Share Biz News গত বছর জিডিপির তুলনায় মার্কেট ক্যাপিটাইলইজেশনে (বাজার মূলধন) কিছুটা উন্নত হয়েছে। বছরের ব্যবধানে তা বেড়েছে প্রায় দুই শতাংশ। ২০১৬ সাল শেষে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন টু জিডিপির অনুপাত ছিল ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। ২০১৭ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৬২ শতাংশে। তবে এটা সন্তোষজনক নয় বলে মন্তব্য করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত, ভালো প্রতিষ্ঠানের জোগান বাড়লে জিডিপির বিপরীতে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন বাড়বে।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এশিয়ার অন্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। সেসব দেশে বাজার মূলধন ও জিডিপির অনুপাত সর্বোচ্চ ১৪৩ শতাংশ পর্যন্ত। অথচ বাংলাদেশে এ আনুপাতিক হার প্রায় ২২ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০১৭ সালের শেষে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজগুলোর মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন টু জিডিপির অনুপাত দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। অথচ থাইল্যান্ড (এসইটি) মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন টু জিডিপির অনুপাত ১১০ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ভারতে এ হার (বিএসই) ৮৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। একইভাবে পাকিস্তানে (কেএসই) ২৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় (সিএসই) ২৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ, নেপালে (এনইপিএসই) ৭০ শতাংশ ও মালয়েশিয়ায় (বুরসা মালয়েশিয়া) ১৪২ দশমিক ২৪। বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন টু জিডিপির অনুপাত বৃদ্ধির জন্য ভালো মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তি বাড়ানো জরুরি। কারণ ভালো প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হলে জিডিপিতে এর হার বাড়বে না। তাই সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারসহ ভালো কোম্পানির শেয়ার বাজারে আসা জরুরি। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন বাড়াতে হলে পুঁজিবাজারে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ জরুরি। এসব কোম্পানি বাজারে এলে এমনিতেই মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন বাড়বে। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা। একই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান বাজারে এলেই এ সমস্যা দূর হয়। তিনি বলেন, একটি কোম্পানির আইপিও অনুমোদন পেতে তিন-চার বছর লাগা আমার কাছে বোধগম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির ভাবা উচিত। দেশের পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভালো কোম্পানি আনতে বিএসইসির উদ্যোগ নেওয়া দরকার। একই সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার জন্য সরকারের দিক থেকে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালি-উল মারুফ মতিন বলেন, আইপিও অনুমোদনের পরিমাণ বাড়ানোর পরিবর্তে দিন দিন কমানো হয়েছে। এটা ইতিবাচক দিক হতে পারে না। অবশ্যই আইপিও অনুমোদন বাড়ানো দরকার। না হলে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে অসামঞ্জস্য তৈরি হবে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত সাত বছরে (২০১০-১৬) বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বড় হয়েছে। এ সময়ে জিডিপির আকার বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। অন্যদিকে একই সময়ে জিডিপির অনুপাতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে। ২০১০ সালে জিডিপির অনুপাতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৫০ দশমিক ৭০ শতাংশ। ছয় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমেছে এ অনুপাত। যদিও ২০১৭ সালে এর হার দুই শতাংশ বাড়ে। কিন্তু সেটা জিডিপির তুলনায় সন্তোষজনক নয়। Dailysharebiz লভ্যাংশ প্রদানের শীর্ষে রয়েছে টেলিযোগাযোগ খাত। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। এরপরে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের অবস্থান। অন্যদিকে শেয়ারহোল্ডারদের সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দেয় পেপার ও প্রিন্টিং খাত। রাষ্ট্রায়ত্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুন ২০১৭ শেষ হওয়া বছরে টেলিকম খাত গড়ে মোট ১৫৭ দশমিক শূন্য চার শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা আগের বছর (জুন, ২০১৬) ছিল ১২৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এ খাতের দুটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত। কোম্পানি দুটি হচ্ছে- গ্রামীণফোন লিমিটেড ও বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড। এর মধ্যে গ্রামীণফোন বহুজাতিক কোম্পানি। মোট বাজার মূলধনের প্রায় ১৫ শতাংশই এ কোম্পানিটির দখলে। সর্বোচ্চ লভ্যাংশ প্রদানের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। এ খাতের কোম্পানিগুলো জুন ২০১৭ হিসাববছরে মোট ৬২ দশমিক ৬৪ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা এর আগের হিসাববছরে (জুন ২০১৬) ছিল ৫৯ দশমিক শূন্য চার শতাংশ। ডিএসইতে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে মোট ১৮টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড একমাত্র বহুজাতিক কোম্পানি। শেয়ারহোল্ডারদের সর্বোচ্চ লভ্যাংশ প্রদানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। এ খাতের ১৮টি কোম্পানি গত হিসাব বছরে ৩৭ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। আগের বছর ছিল ২৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জুন ২০১৫ হিসাববছরে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ২৭ দশমিক শূন্য আট শতাংশ। জুন ২০১৭ হিসাববছরে ট্যানারি খাত গড়ে ৩৬ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। ওষুধ ও রসায়ন খাত শেয়ারহোল্ডারদের ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ লভ্যাংশ। সিমেন্ট খাতের লভ্যাংশের পরিমাণ ২২ দশমিক ৬০ শতাংশ। ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে আর্থিক খাত। প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলো মোট ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারদের দেয়। সিরামিক ও বিমা খাতের যথাক্রমে ১১ দশমিক ২৮ এবং ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এদিকে ব্যাংক খাতের লভ্যাংশ দেওয়ার পরিমাণ ১০ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এরপরেই বিবিধ খাতের অবস্থান। এ খাতের কোম্পানিগুলো সমন্বিতভাবে আট দশমিক ৫১ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। ভ্রমণ ও অবকাশ খাত ছয় দশমিক ৪০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে শেয়ারহোল্ডারদের। জুট ও বস্ত্র খাতের এ হার যথাক্রমে পাঁচ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং পাঁচ দশমিক ৫০ শতাংশ। তথ্য ও প্রযুক্তি খাত পাঁচ দশমিক ২৬ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। সেবা ও আবাসন খাতের লভ্যাংশের পরিমাণ চার দশমিক ৭৯ শতাংশ। মিউচুয়াল ফান্ডগুলো গড়ে তিন দশমিক ১৯ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। খাতভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে কম লভ্যংশ দেয় পেপার ও প্রিন্টিং খাত। এ খাত গড়ে এক দশমিক শূন্য তিন শতাংশ লভাংশ দেয় বলে আইসিবির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কোনো কোম্পানির তার মুনাফার যে অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করে তা-ই লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড। কখনও কখনও রিজার্ভ বা সংরক্ষিত তহবিল থেকেও লভ্যাংশ বিতরণ করা হয়। লভ্যাংশ নগদ টাকা ও স্টক বা বোনাস (শেয়ার) অথবা উভয় আকারে হতে পারে। ২০১৭ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার পরিমাণ কমছে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে। ডিএসইর তথ্যমতে, ২০১৭ সালে ২৯১টি কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয় এবং এর মধ্যে ১৮৫টি কোম্পানি দুই শতাংশ থেকে ৭৭৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগের বছর ১৯১টি কোম্পানি তিন শতাংশ থেকে ৬৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এদিকে ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪২টি কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বৃদ্ধি করেছে, যার পরিমাণ দুই হাজার ৮০৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আর এর জন্য কোম্পানিগুলোকে ২৭৯ কোটি ২৯ লাখ বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে হয়েছে। ডিএসইর তথ্যমতে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যাংক খাতের ১৭টি, আর্থিক খাতের ১০টি, প্রকৌশল খাতের ২২টি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের পাঁচটি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের পাঁচটি, পাট খাতের একটি, বস্ত্র খাতের ২৪টি, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১২টি, সেবা ও আবাসন খাতের দুটি, সিমেন্ট খাতের একটি, আইটি খাতের চারটি, ট্যানারি খাতের দুটি, সিরামিক খাতের তিনটি, বিমা খাতের ২৫টি এবং বিবিধ খাতের সাতটি কোম্পানি রয়েছে। ২০১৬ সালে মোট ১২৬টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বাড়িয়েছিল। এ বছরে দুই হাজার ৫০৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূলধন বৃদ্ধি করে। এর জন্য ২৫০ কোটি ৮০ লাখ বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে হয়। সেই হিসাবে গত বছরের তুলনায় ১৬ কোম্পানি নতুন যুক্ত হয়েছে বোনাস শেয়ার ইস্যু করার তালিকায়। তাতে মূলধন বেড়েছে ২৯৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সিকিউরিটিজ আইনের বিধান অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি ১০ শতাংশের কম ও পাঁচ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিলে ‘এ’ থেকে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হয়। যদি পাঁচ শতাংশেরও কম কোনো ধরনের লভ্যাংশ প্রদান করে তাহলে স্টক এক্সচেঞ্জের ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে কোম্পানিটির লেনদেন পরিচালিত হয়। গেল বছরের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালেও ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। বছরের প্রথম দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত টানা তৃতীয় দিনের মতো বেড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৩০০ পয়েন্ট অতিক্রম করার পাশাপাশি গতকাল সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে ব্লু-চিপ সূচক ডিএসই-৩০। একই সঙ্গে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএসও গতকাল সর্বোচ্ছে অবস্থান করছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বছরের প্রথম দিন ডিএসইএক্স ৬ হাজার ২৪৪ পয়েন্টে লেনদেন শুরু হওয়ার পর গতকাল তা ৬ হাজার ৩১৮ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। দিনের শুরু থেকেই ব্যাংক, প্রকৌশল, জ্বলানি ও বিদ্যুৎ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শেয়ারে ক্রয় চাপে টানা বাড়তে থাকে সূচক। দিন শেষে সূচকের পাশাপাশি বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫৭৬ কোটি ৫৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার। ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জটির ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩১৮ পয়েন্টের ওপরে উঠে আসে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪১১ পয়েন্টে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ অবস্থান সূচকটির। অন্যদিকে ১০ পয়েন্ট বেড়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ অবস্থান ২ হাজার ৩০১ পয়েন্টে পৌঁছেছে ব্লু-চিপ সূচক ডিএসই-৩০। আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কমলেও গতকাল ডিএসইতে মোট ১৫ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ৬৭৬টি শেয়ার ও ইউনিট ফান্ড হাতবদল হয়েছে, টাকার অংকে যা ৫৭৬ কোটি ৫৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। দিনের শুরু থেকেই ক্রয় চাপে থাকা ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের দখলে ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২০ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও বস্ত্র খাতের দখলে ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ করে। এর বাইরে মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশ প্রকৌশল খাতের ও ৮ শতাংশ ছিল ওষুধ-রসায়ন খাতের শেয়ারে। ডিএসইতে মোট লেনদেন হওয়া ৩৩৬টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ও বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৫টির, কমেছে ১০১টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির। ডিএসইতে টাকার অংকে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০টি সিকিউরিটিজ হলো ইউনাইটেড পাওয়ার, ড্রাগন সোয়েটার, গ্রামীণফোন, ইফাদ অটোজ, ইসলামী ব্যাংক, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, স্কয়ার ফার্মা, ডরিন পাওয়ার, ন্যাশনাল টিউবস ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। এদিকে গতকাল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএসইএক্স ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১ হাজার ৮১৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৩০টি কোম্পানির ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ৬৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৩০ লাখ ৫৬ হাজার টাকার শেয়ার। ইনিশিয়াল পাবলিক অফারে (আইপিও) কোটা সুবিধার মেয়াদ ফের বাড়ানো হবে কি না এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। এ কোটা সুবিধা বহাল রাখার ক্ষেত্রে অমত নেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনেরও (বিএসইসি)। এ পরিপ্রেক্ষিতে কোটার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়াতে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি সুপারিশ প্রস্তাব পাঠিয়েছে বিএসইসি।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ২০১২ সাল থেকে আইপিওতে কোটা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। পাঁচ দফা বাড়ানোর পর এর সর্বশেষ সময়সীমা গত ৩১ ডিসেম্বর (২০১৭) শেষ হয়েছে। কোটার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাই বিনিয়োগকারীদের কোটা সুবিধা অব্যাহত থাকুক। কিন্তু এর জন্য অর্থ মন্ত্রণালের অনুমতি প্রয়োজন রয়েছে। ইতোমধ্যে এ কোটার মেয়াদ পঞ্চমবার বাড়ানো হয়েছে। শেষবার সময়সীমা বাড়ানোর সময় সেখান থেকে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে আর মেয়াদ বাড়ানো হবে না। তাই বিষয়টি নির্ভর করছে মন্ত্রণালয়ের ওপর।’ একই বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে আইপিও কোটার মেয়াদ ছয় মাস বৃদ্ধির সুপারিশ করেছি। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলেই কেবল কোটার মেয়াদ বাড়বে।’ উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিকতা রোধ, স্থিতিশীলতা ও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে বিশেষ সুবিধা দিতে ২০১২ সালের ৫ মার্চ স্কিম ঘোষণা করে। মিউচুয়াল ফান্ড ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মতো নির্ধারিত কোটার মতো এ স্কিমে মার্জিন ঋণ হিসাব ও নন-মার্জিন হিসাব (বিও) উভয় ক্ষেত্রে চিহ্নিত ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর জন্য ২০১২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ইস্যু হওয়া সব পাবলিক ইস্যুতে ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত এর মেয়াদ পঞ্চমবারের মতো বাড়ানো হয়েছে। প্রথমবার ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ মাস সময়ে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত আবেদনকারীর তালিকা তৈরি করে জমা দেওয়া হয় কমিশনে। এতে ৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৮০ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে কোটা সুবিধার আওতায় নেওয়া হয়। তালিকায় রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ২০৪ ব্রোকারেজ হাউজের সাত লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৩ জন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ১০৩টি ব্রোকারেজ হাউজের এক লাখ ৫৪ হাজার ২৭৭ জন এবং ২৫ মার্চেন্ট ব্যাংকের ৩৯ হাজার ১২০ জন। প্রসঙ্গত, পাবলিক ইস্যু রুলস-২০১৫ অনুযায়ী, ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে আইপিও ক্ষেত্রে ইলিজেবল ইনভেস্টরদের (মার্চেন্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, স্টক ডিলার, ইন্স্যুরেন্স, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ও অলটারনেটিভ বিনিয়োগ ফান্ড প্রভৃতি) জন্য ৫০ শতাংশ। যার মধ্যে ১০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও অন্যান্য বিনিয়োগকারী ৪০ শতাংশ। সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য ৫০ শতাংশ। এতে ১০ শতাংশ নন-বাংলাদেশি ও ৪০ শতাংশ অন্যান্য। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ইলিজেবল বিনিয়োগকারীর জন্য ৬০ শতাংশ কোটা রয়েছে। যাতে ১০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও ৫০ শতাংশ অন্যান্য। আর সাধারণ বিনিয়েগকারীর জন্য ৪০ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ নন-বাংলাদেশি ও ৩০ শতাংশ অন্যান্য বিনিয়োগকারী। বিশেষ স্কিমের আওতায় সাধারণ বিনিয়োগকারীর কোটা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা পেয়ে থাকে। Share Biz News Transaction on the over-the-counter (OTC) market of Dhaka Stock Exchange (DSE) jumped 17-fold in the outgoing calendar year 2017 compared to the previous year. The shares of the companies, which were de-listed from the main trading floor, are traded on the OTC market. Non-performing, non-operational or non-existent companies are allowed to be traded on the OTC market. The Bangladesh Securities and Exchange Commission (BSEC) formally launched the OTC market on September 6, 2009 in an effort to facilitate the trading of the de-listed companies.
Currently, 65 companies are listed on the OTC market which started with 51 companies on September 6, 2009. Between January and December 2017, about 10.88 million shares worth above Tk 726 million were traded on the OTC market, according to DSE data. In 2016, about 3.32 million shares were traded in the OTC trading floor, generating a turnover of Tk only 40 million. However, transaction executed on OTC market in 2017 is still insignificant compared to single-day transaction observed by the main bourse, a stockbroker said. Daily average turnover observed by the premier bourse is Tk 8.75 billion in 2017, whereas the OTC market witnessed a total transaction worth Tk 726 million in 2017. Market insiders said OTC market of the DSE remained sluggish since the launching more than eight years back, causing only sufferings to some investors rather than relieving them. They said the situation has intensified the sufferings of the investors who became victims of junk shares with the capital market debacle in late 2010-11. Reza Hassan, a small investor, told the FE that he could not sell even a single share in the just concluded calendar year. "It is a buyer-less market". Another investor said that he has about Tk 0.58 million shares in the OTC market, but failed to sell due to systematic complexity. He alleged that the buyers do not show interest in purchasing OTC stocks due to inconvenient selling procedure. He urged the securities' regulator to make the transaction process easier and more functional, as the existing system allows investors only to offer a price in case of selling shares whereas they cannot quote a price when they want to buy. An OTC market official said the investors lost their interest in stocks trading in the OTC market as they considered those risky. "Besides, they are confused whether the OTC stocks could be re-sold or not," he said. "To protect the investors' interest, the securities regulator should reconstruct the board of directors of the companies under OTC market or appoint administrators in the companies," said an analyst at a leading brokerage firm, seeking anonymity. Meanwhile, the Dhaka bourse has moved to revamp OTC market so that it becomes more active and attractive. Recently, the primer bourse has also sent a set of proposals on how to improve the operating system of OTC market, to the Bangladesh Securities and Exchange Commission (BSEC) for approval. "We will go for the next course of action after receiving instructions from the regulator," a DSE official said. The total market capitalisation of the OTC market stood at Tk 9.28 billion as on Thursday, the last trading day of 2017 while total number of shares in the OTC market is 418.30 million. Meanwhile, Alif Industries, which was in the OTC market for more than eight years, backed to DSE main market and commenced trading from Thursday as the company complied with all the regulations required for beginning trade in the main board. Each share of Alif Industries closed at Tk 143 on Thursday, soaring 10 per cent. DSE management also allowed Wata Chemicals to main market from OTC market which started its share trading on the main market on May 14, 2014. অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেডকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিএসইসির ৬২২তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।
অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। কোম্পানিটিকে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ২ কোটি শেয়ার ইস্যু করার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। ৩০ জুন ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ১২ টাকা ৪৫ পয়সা। এছাড়া, বিগত চার বছরের অার্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) গড় হারে হয়েছে ৯১ পয়সা। সূত্র জানায়, কোম্পানিটি যন্ত্রপাতি ক্রয়, ভবন নির্মান এবং আইপিওর খরচ বাবদ এ টাকা ব্যয় করবে। উল্লেখ, কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড, আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং সিএপিএম এ্যাডভাইজরি লিমিটেড। অর্থসূচক চলতি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর নির্বাচনের প্রভাব পুঁজিবাজারের ওপর পড়ে থাকে। তবে কোনো নেতিবাচক প্রভাব যেন পুঁজিবাজারে না পড়ে সেজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আর বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রতি চারটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করার তাগিদ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন । আজ ১ জানুয়ারি বিএসইসিতে অনুষ্ঠিত বিএমবিএ’র সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন , ২০১৮ সাল হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বছর। এটি নির্বাচনের বছর। এতে কি হবে তা বলা যায় না। কিন্তু এই নির্বাচনের বছরে ক্যাপিটাল মার্কেটে যেন কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সে বিষয়ে সকল ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বিএসইসি। এক্ষেত্রে এ মুহূর্ত্বে ৪টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
০১. বুক বিল্ডিং আইনটি সংশোধন করা হচ্ছে। এই সংশোধন কিভাবে করা হবে সে বিষয়ে শিগগিরই মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বিএসইসি বসবে। ০২. করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন। এই গাইডলাইন প্রণয়নে বিএসইসির পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সেগুলো বিবেচনা করে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো শিগগিরই মতামত পাঠাবে। ০৩. বহুজাতিক এবং সরকারি কোম্পানি তালিকাভুক্তকরণে কি কি করা যেতে পারে এর প্রস্তাব লিখিতাকারে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিএসইসির কাছে শিগগিরই জমা দেবে। ০৪. শিগগিরই একীভূতকরণের আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কোনো পরামর্শ থাকলে তা বিএসইসির কাছে পাঠাতে হবে। বিএসইসির চেয়ারম্যান স্টক এক্সচেঞ্জের সমালোচনা করে বলেন, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করা হয়েছে। ক্লিয়ারিং ও সেট্লমেন্ট কোম্পানি বা সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জের এ বিষয়ে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে কি করা যেতে পারে সে বিষয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে মতামত পাঠাতে বলেছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। তিনি মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনকে সবসময় ডিবিএর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার তাগিদ দেন। এদিকে বৈঠক শেষে বিএসইসির কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালা বলেন , বুক বিল্ডিংয়ে ক্যাপিটাল ইস্যুর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস করা হয় কিন্তু ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস করা হয়না। আর ফান্ডমেন্টাল অ্যানালাইসিস না করার কারণে বিনিয়োগকারীরা অন্ধকারে থাকেন। পরবর্তীতে যেন ক্যাপিটাল ইস্যুর ক্ষেত্রে ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস করা হয় সে বিষয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানান বালা। শেয়ারনিউজ24 বছর শেষে ঢাকা স্টক এক্সেচঞ্জে (ডিএসই) বড় রকমের অর্জন দিয়েই শেষ হয়েছে। আলোচ্য বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে ২৪৮ কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৮৭৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। গত বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে ২৪১ কার্যদিবসে মোট লেনদেনের পরিমান ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ১৫৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা এবং গড়ে লেনদেনের পরিমান ছিল ৪৯৪ কোটি ৪৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বৃদ্ধি পেয়ে ৮২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বা ৯৭ হাজার ৮০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। লেনদেনে যেমন বেড়েছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডিএসইর সূচকও। ২০১৭ সালে ডিএসইএক্স মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ৬৩৩৬ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে উন্নিত হয় এবং সর্বনিম্ন ছিল ৫ হাজার ৮৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট। ২০১৭ সালে গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ২০৮ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬ হাজার ২৪৪ দশমিক ৫২ পয়েন্টে উন্নীত হয়। এছাড়াও, ২০১৭ সালে ডিএস৩০ মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৯০ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনিম্ন ছিল ১ হাজার ৮২১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট। ২০১৭ সালে গত বছরের চেয়ে ৪৭২ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা ২৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ২৮৩ দশমিক ২৩ পয়েন্টে উন্নীত হয়। ডিএসইএক্স শরীয়াহ্ সূচক (ডিএসইএস) ২০১৭ (ডিএসইএস) মূল্য সূচক সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৯৪ দশমিক ২৬ পয়েন্টে উন্নীত হয় এবং সর্বনিম্ন ছিল ১ হাজার ২০০ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট। গত বছরের চেয়ে ১৯৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা ১৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৩৯০ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়৷ অন্যদিকে, সূচকের পাশাপাশি ডিএসই’র বাজার মূলধনও ইতিহাসের এক নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে৷ ডিএসই বাজার মূলধন আগের বছরের তুলনায় ৮১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বা ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে৷ ২০১৭ সালে বাজার মূলধন সর্বোচ্চ ৪ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয় এবং সর্বনিম্ন ছিল ৩ লাখ ৪৪ হাজার কোটি। অর্থসূচক ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে লেনদেন বেড়েছে ৩০ দশমিক ৪৮ শতাংশ বা ২ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। আলোচ্য বছরে বিদেশি পোর্টফোলিওতে মোট লেনদেন হয়েছে ১১ হাজার ৪৪৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৭৭৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
|
Midway News TeamWe publish the latest stock market news to help you decide on your investment decisions. Archives
April 2024
Categories |